ইশক ভিশক

ইশক ভিশক হল ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি হিন্দি কামিং-অফ-এজ রোম্যান্স চলচ্চিত্র। ছবিটিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন শাহিদ কপূর, অমৃতা রাওশিনাজ ট্রেজারি। এটি শাহিদ কপূর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র যেটিতে তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।

ইশক ভিশক
ইশক ভিশক চলচ্চিত্রের পোস্টার
পরিচালককেন ঘোষ
প্রযোজককুমার তৌরানি
রমেশ তৌরানি
চিত্রনাট্যকারবিনোদ রঙ্গনাথ
কাহিনিকারকেন ঘোষ
শ্রেষ্ঠাংশেশাহিদ কপূর
অমৃতা রাও
শিনাজ ট্রেজারি
সুরকারগান:
অনু মালিক
নেপথ্য সংগীত:
রাজু সিং
চিত্রগ্রাহকঅমিত রায়
সম্পাদককেন ঘোষ
প্রযোজনা
কোম্পানি
কৃষ্না আর্ট লিমিটেড
পরিবেশকটিপস মিউজিক ফিল্মস
মুক্তি
  •  মে ২০০৩ (2003-05-09)
দৈর্ঘ্য১২৭ মিনিট[1]
দেশভারত
ভাষাহিন্দি
নির্মাণব্যয়৫ কোটি রুপি[1]
আয়১২ কোটি ২৬ লক্ষ ৩০ হাজার রুপি[1]

কাহিনি-সারাংশ

রাজীব (শাহিদ কপূর) তার কলেজের অন্যতম জনপ্রিয় ছাত্র হয়ে উঠতে চায়। কিন্তু প্রেমিকা না থাকায় ড্যানি (শাভি) ও জাভেদ (কপিল জাভেরি) তাকে ও তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু মাম্বোকে (বিশাল মালহোত্রা) ব্যঙ্গ করে। জাভেদ ও ড্যানি আলিবাগে বেড়াতে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। তারা রাজীব ও মাম্বোকে এই শর্তে আমন্ত্রণ জানায় যে, তাদের সঙ্গে করে বান্ধবী নিয়ে আসতে হবে। রাজীব স্থির করে সে তার ছেলেবেলার বন্ধু পায়েলকে (অমৃতা রাও) তার প্রেমিকা সাজার জন্য অনুরোধ জানাবে। পায়েল একটু চাপা স্বভাবের মেয়ে। রাজীব প্রেম ও ঐকান্তিক সম্পর্কে বিশ্বাস করত না। তাই এই কাজটা সে শুধু বেড়াতে যাওয়ার জন্যই করেছিল। কিন্তু পায়েল ছোটোবেলা থেকেই মনে মনে রাজীবকে ভালোবেসে এসেছিল। তাই সে নিজের "অনুভূতি" দিয়েই রাজি হয়ে গেল। দু’জনে একসঙ্গে সময় কাটাতে শুরু করল। তখনই রাজীব জানতে পারল যে, পায়েল সত্যিই তাকে ভালোবাসে। বেড়াতে যাওয়ার সময় এল। বাবাকে বুঝিয়ে পায়েল তার অনুমতি আদায় করল। তাদের সঙ্গে গেল ড্যানি, জাভেদ ও তাদের প্রেমিকারা। তারা গিয়ে উঠল ড্যানির বিচ হাউসে। ড্যানি রাজীবের পানীয়ে মাদক মিশিয়ে দিয়েছিল। নেশার ঘোরে রাজীব পায়েলের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করল। পায়েল ভাবল যে, রাজীব তাকে ভালোবাসে না। তাই সে রাজীবকে চড় মারল। মধ্যরাতের পিকনিকে ঘটা সেই ঘটনাটির পর ড্যানি ও জাভেদের প্রেমিকারা ভুল বোঝাবুঝির নিরসন করতে এগিয়ে আসে। পায়েল বুঝতে পারে যে, মাতাল অবস্থায় রাজীবের খারাপ ব্যবহারের পিছনের ড্যানির হাত রয়েছে। তাই সেটা রাজীবের দোষ নয়। কিন্তু রাজীব পায়েলকে ক্ষমা করতে চায় না। বরং সে দাবি করে সর্বসমক্ষে তাকে চুম্বন করতে হবে। পায়েল এই বলে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে যে, নিজের ভালোবাসার প্রমাণ দিতে সে এত সস্তা কাজ করতে পারবে না। তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। রাজীব চ্যালেঞ্জ জানায় যে, সে কলেজের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটিকে নিজের প্রেমিকা বানাবে। মাম্বো রাজীব ও পায়েলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পক্ষে ছিল। সে ব্যাপারটা পছন্দ করে না এবং রাজীবকে পায়েলের কাছেই ফিরে যেতে বলে। কিন্তু রাজীব তাকে বকাঝকা করে।

কিছুদিন পরেই আলিশা সহায় (শিনাজ ট্রেজারিওয়ালা) নামে এক কেতাদুরস্ত সুন্দরী মেয়ে স্পেনসার কলেজে ভর্তি হয়। তাকে দেখে মোহগ্রস্থ হয়ে পড়ল রাজীব। বন্ধু লাভ গুরুর (যশ টংক) সাহায্যে তার প্রণয় ভিক্ষা করতেও সমর্থ হল সে। এদিকে মাম্বো ও পায়েলের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব হয়ে যায়। মাম্বো পায়েলকে খুশি রাখার চেষ্টা করে এবং সব সময় তার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরতে শুরু করে। পায়েল তখনও রাজীবের ভালোমন্দের কথা চিন্তা করত। আলিশা ও রাজীবকে একসঙ্গে দেখে মনে মনে তার খুবই কষ্ট হত। তা সত্ত্বেও, পায়েল রাজীবের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে না এবং রাজীবের জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানায়। রাজীব এটা দেখে অবাক হয় যে, আলিশার বদলে পায়েলই প্রথম তাকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানালো। আলিশা নিজের মডেলিং শ্যুট নিয়েই ব্যস্ত ছিল। রাজীব খেয়াল করল পায়েল ও মাম্বো পরস্পরের খুব কাছে চলে এসেছে। ব্যাপারটায় সে বিরক্ত হয়ে উঠল। জন্মদিনের পার্টিতে একটি পাবে পায়েলকে দেখে অবাক হল রাজীব। পায়েল আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল। সে রাজীবকে বলল যে, তার মনে হয় ভালোবাসা সম্পর্কে সে যা ভাবত, তা ভুল। সেই জন্য রাজীব আলিশাকে পেয়ে এত সুখী হয়েছে। আলিশার মধ্যে যা আছে, তা তার নিজের মধ্যে নেই বলেই মনে করে সে। পায়েলের জন্য মাম্বো ও রাজীবের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। আলিশাও আস্তে আস্তে পায়েলকে অপছন্দ করতে শুরু করে। রাজীব আর পায়েলকে কথা বলতে দেখে তার মাথা গরম হয়ে গেল। সে রাজীব ও তার এক বন্ধুর থেকে জেনেছিল যে সে কলেজে ঢোকার আগে পায়েল ছিল রাজীবের প্রেমিকা। পায়েলের কাছে গিয়ে আলিশা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করল এবং তার বিরুদ্ধে অন্যের প্রেমিক ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আনল। মাম্বো পায়েলের পক্ষে কথা বলল। কিন্তু তার কথা কান দিল না আলিশা। তাতে মাম্বো খুব রেগে গেল। রাজীব ও মাম্বোর মধ্যে হাতাহাতি লেগে গেল। আলিশা ও রাজীব চলে গেলে সবাই রাজীবের বিরুদ্ধে বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি করার অভিযোগ তুলল। আলিশার ফ্ল্যাটে রাজীব শুধু ভাবতে লাগল, পায়েল তাকে কত ভালোবাসে আর সে তাকে প্রত্যাখ্যান করল। তার মনে পড়ল, তাদের ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরেও পায়েল তার কত খেয়াল রাখত। আলিশা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে লাগল। সে ক্রমাগত তার ভালোবাসার স্বীকারোক্তি চাইতে লাগল। আলিশাকে পায়েল মনে করে সে তাকে জড়িয়ে ধরল আর বলে উঠল, “আমি তোমাকে ভালোবাসি, পায়েল।”

কলেজের ফেয়ারওয়েল পার্টিতে রাজীব মাম্বোর কাছে ক্ষমা চাইল। সে ভেবেছিল, মাম্বো পায়েলের পাণিপ্রার্থী। কিন্তু তারপরই সে নিজের ভুল বুঝতে পারল। কারণ, পায়েল তখনও রাজীবকে ভালোবাসে আর মাম্বো শুধুই তার বন্ধু। রাজীব পায়েলের কাছে ক্ষমা চাইতে গেল। কিন্তু পায়েল তার কথা শুনতে চাইল না। তারপর রাজীব মাইক্রোফোন নিয়ে সর্বসমক্ষে পায়েলের কাছে ক্ষমা চাইল। সে বলল যে, পায়েল বিশ্বাস না করলেও সে তাকে খুব ভালোবাসে। পায়েল তখনও রেগে ছিল। সে বলল, রাজীব সকলের সামনে নাটক করছে। আজ ভালোবাসা জানাতে এলেও সে গলবে না। রাজীব তার সামনে দাঁড়িয়ে অনুনয়ের চোখে তার দিকে তাকালো। পায়েল এবার বুঝতে পারল যে রাজীব তাকে ভালোবাসে। সে রাজীবকে আলিঙ্গন করল। আলিশা এসে দেখল রাজীব ও পায়েল ধীর লয়ের গানের সঙ্গে নাচছে। পায়েলের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য সে গিয়ে তার কাছে ক্ষমা চাইল এবং তাদের সৌভাগ্য কামনা করল। ছবির শেষে রাজীব ও পায়েলকে একসঙ্গে নাচতে দেখা যায়।

কলাকুশলী

  • শাহিদ কপূর – রাজীব মাথুর
  • অমৃতা রাও – পায়েল মেহরা
  • শেনাজ ট্রেজারি – আলিশা সহায়
  • যশ টংক - রকি
  • সতীশ শাহ – শ্রীযুক্ত মাথুর
  • বিশাল মালহোত্রা - মাম্বো
  • উপাসনা সিং - কমলাবাই
  • নীলিমা আজিম – শ্রীমতী মাথুর
  • বিবেক বসওয়ানি – জনৈক অধ্যাপক
  • ওমাঙ্গ কুমার – সঞ্চালক (ক্যামিও)

সাউন্ডট্র্যাক

ইশক ভিশক
অনু মালিক কর্তৃক সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম
মুক্তির তারিখ
১০ এপ্রিল, ২০০৩ (ভারত)
ঘরানাচলচ্চিত্র সাউন্ডট্র্যাক
সঙ্গীত প্রকাশনী
টিপস মিউজিক ফিল্মস
প্রযোজকঅনু মালিক
অনু মালিক কালক্রম
খুশি
(২০০৩)
ইশক ভিশক
(২০০৩)
ম্যায় প্রেম কি দিওয়ানি হুঁ
(২০০৩)
পেশাদারী মূল্যায়ন
পর্যালোচনা স্কোর
উৎসমূল্যায়ন
ইন্ডিয়া এফএমলিংক

ছবিটির গীতিকার ও সুরকার হলেন যথাক্রমে সমীরঅনু মালিক। ভারতীয় চলচ্চিত্রের বাণিজ্য-বিষয়ক ওয়েবসাইট বক্স অফিস ইন্ডিয়ার হিসাব অনুযায়ী ছবির সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম বিক্রির সংখ্যা প্রায় ১,২০০,০০০। এটি সেই বছরের একাদশ সর্বাধিক-বিক্রীত অ্যালবাম ছিল।[2]

নং.শিরোনামগীতিকারশিল্পী(বৃন্দ)দৈর্ঘ্য
১."আঁখোঁ নে তুমহারি"সমীরঅলকা যাজ্ঞিক, কুমার শানু০৫:৩৬
২."অ্যাইসা কিউঁ হোতা হ্যায়"সমীরঅলকা যাজ্ঞিক০৪:৫৪
৩."চোট দিল পে লাগি"সমীরআলিশা চিনয়, কুমার শানু০৫:৩৪
৪."ডুবা রে ডুবা"সমীরঅলকা যাজ্ঞিক, সোনু নিগম০৪:০৯
৫."ইশক ভিশক প্যার ব্যার"সমীরঅলকা যাজ্ঞিক, কুমার শানু০৪:৫৬
৬."কৌন হ্যায় ওহ্‌"সমীরআলিশা চিনয়, উদিত নারায়ণ০৪:২৫
৭."লাভ লাভ তুম করো"সমীরসোনু নিগম০৫:৪১
৮."মুঝপে হর হাসিনা"সমীরআলিশা চিনয়, কুমার শানু, সোনু নিগম০৪:৪০
৯."মুঝসে হুই বস ইয়েহ্‌"সমীরঅলকা যাজ্ঞিক০১:৫১
১০."থিম পিস"সমীরঅলকা যাজ্ঞিক, সোনু নিগম০১:৩৪

তথ্যসূত্র

  1. "Ishq Vishk - Movie - BOI"Box Office India। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬
  2. "Music Hits 2000–2009 (Figures in Units)"Box Office India। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.