ইয়াণ্ডাবু সন্ধি

ইয়াণ্ডাবু সন্ধি বা ইয়াণ্ডাবু চুক্তিপত্র (ইংরেজি: Treaty of Yandabo; বর্মী: ရန္တပို စာချုပ်) প্রথম অ্যাংলো-বর্মি যুদ্ধ সমাপ্তের পর স্বাক্ষরিত শান্তির চুক্তিপত্রের নাম। ১৮২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে এই সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। ব্রিটিশ বাহিনীর তরফ থেকে সার আর্চিবল্ড ক্যাম্পবেল ও ব্রহ্মদেশের তরফ থেকে লেগাইংগয়ের রাজ্যপাল মহা মিন লা কিয় টিন এই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। চুক্তিপত্র সাক্ষরিত হওয়ার সময় ব্রিটিশ বাহিনী রাজধানী আভা থেকে ৪০ কি.মি. দূরত্বে ইয়াণ্ডাবু নামক স্থানে উপস্থিত ছিল। এই সময়ে ব্রিটিশ বাহিনী তাদের শর্ত মেনে নিয়ে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করার জন্য বর্মিদের বাধ্য করেছিল। ইয়াণ্ডাবু সন্ধির শর্তসমূহ ছিল নিম্নরুপ:
(১) অসম, মণিপুর, আরাকান ও টেনাসরিম সহ শালউইন নদীর দক্ষিণ উপত্যকা ব্রিটিশদের হাতে ন্যাস্ত করা।
(২) কাছাড় ও জৈন্তিয়া অঞ্চলে হস্তক্ষেপ না করা।
(৩) যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ লক্ষ ব্রিটিশ পাউন্ড চারটি কিস্তিতে ব্রিটিশদের পরিশোধ করা।
(৪) আভা ও কলকাতার মাঝে স্থায়ী ব্রিটিশ প্রতিনিধি নিয়োগ করা।
(৫) ব্রিটিশদের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করা।

ব্রিটেনের ইতিহাসে এই যুদ্ধটি ছিল সবচেয়ে ব্যয়বহুল যুদ্ধ। চুক্তি স্বাক্ষরের পরে যুদ্ধের অবসান ঘটে।[1] সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১৫ হাজার ভারতীয় ও ইংরেজ সৈন্য প্রথম ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। এই যুদ্ধে ব্রিটেনের সর্বমোট ৫০ লক্ষ পাউন্ড খরচ হয়েছিল যা ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থাকে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে নিক্ষেপ করেছিল।

এই চুক্তির পর থেকে ব্রহ্মদেশের মানদের স্বাধীনতার অবসান ঘটে। চুক্তিমতে ১০ লক্ষ ব্রিটিশ পাউন্ড পরিশোধ করার ফলে মান সাম্রাজ্যে তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দেয়। এরপর ব্রিটিশরা মান সাম্রাজ্যের সঙ্গে আরও দুইবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ১৮৮৫ সালের মধ্যে ব্রিটিশরা সমস্ত ব্রহ্মদেশ অধিকার করে নেয়।

তথ্যসূত্র

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.