আসমা জাহাঙ্গীর

আসমা জিলানী জাহাঙ্গীর (উর্দু: عاصمہ جہانگیر: ʿĀṣimah Jahāṉgīr; জন্ম: ২৭ জানুয়ারি, ১৯৫২ - মৃত্যু: ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮) লাহোরে জন্মগ্রহণকারী পাকিস্তানের বিশিষ্ট মহিলা আইনজীবী ছিলেন। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। এছাড়াও, সংস্থার মহাসচিব ও পরবর্তীকালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন আসমা জাহাঙ্গীর

আসমা জিলানী জাহাঙ্গীর
২০১০ সালে আসমা জাহাঙ্গীর
সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন
দায়িত্ব গ্রহণ
২৭ অক্টোবর, ২০১০
রাষ্ট্রপতিআসিফ আলি জারদারি
প্রধানমন্ত্রীরাজা পারভেজ আশরাফ
যার উত্তরসূরীকাজী আনোয়ার
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি
কাজের মেয়াদ
১৯৮৭  ২০১১
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মআসমা জিলানী
(১৯৫২-০১-২৭)২৭ জানুয়ারি ১৯৫২
লাহোর, পাঞ্জাব প্রদেশ, পশ্চিম-পাকিস্তান (বর্তমানে - পাকিস্তান)
মৃত্যু২ নভেম্বর ২০১৮(2018-11-02) (বয়স ৬৬)
লাহোর, পাকিস্তান
জাতীয়তাপাকিস্তানি
সন্তান১ পুত্র ও ২ কন্যা
বাসস্থানইসলামাবাদ, ইসলামাবাদ ক্যাপিটাল টেরিটরী (আইসিটি)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীপাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় (এলএলবি.)
কিন্নাইয়ার্দ (বিএ)
সেন্ট গালেন বিশ্ববিদ্যালয় (জেএসডি)
পেশাসুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি
জীবিকাআইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী
সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনইফতিখার মুহাম্মদ চৌধুরী, পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারহিলাল-ই-ইমতিয়াজ (২০১০)
মার্টিন এনালস পুরস্কার (১৯৯৫)
রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার
লিও ইতিঞ্জার পুরস্কার (২০০২)
ফোর ফ্রিডমস পুরস্কার (২০১০)

প্রারম্ভিক জীবন

সমৃদ্ধশালী ও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় এবং মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার পরিবারে আসমা জাহাঙ্গীরের জন্ম। বাবা মালিক গুলাম জিলানী সরকারী চাকুরীজীবি ছিলেন। অবসর শেষে তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ও বেশ কয়েক বছর কারাভোগ করেন। এছাড়াও, সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধাচরণ করায় গৃহে অন্তরীণ ছিলেন ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করায় পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন।

মা সহ-শিক্ষানুক্রমিক মহাবিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন ও স্বল্পসংখ্যক মুসলিম মহিলা হিসেবে উচ্চতর শিক্ষালাভে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। এছাড়াও তিনি প্রাচীন ধ্যান-ধারণার বিপক্ষে তিনি লড়াই করেন। স্বামীর কারাভোগের ফলে ১৯৬৭ সালে নিজস্ব কাপড়ের ব্যবসা পরিচালনা করেন।[1]

আসমা লাহোরের কিন্নাইর্দ কলেজ থেকে স্নাতক ও ১৯৭৮ সালে আইনে স্নাতকধারী হন। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রী পান। এছাড়াও, সুইজারল্যান্ডের সেন্ট গালেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রীসহ কানাডার কুইন্স ও কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী লাভ করেন।

কর্মজীবন

পাকিস্তানের মানব এবং মহিলা অধিকার, সংখ্যালঘু ও শিশুদের ধর্মীয় অধিকার নিয়ে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন। মৃত্যু পূর্ব-পর্যন্ত তিনি হুদুদ অধ্যাদেশ ও পাকিস্তানে ইসলামীকরণের বিষয়ের অংশ হিসেবে জেনারেল মুহাম্মদ জিয়া-উল-হকের ব্লাসফেমি আইনের কড়া সমালোচক তিনি।[2][3]

২৭ অক্টোবর, ২০১০ তারিখে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন ও আইনজীবীদের আন্দোলনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।[4] এছাড়াও তিনি প্রথম মহিলা হিসেবে এ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ায় মানবাধিকার ফোরামে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালনসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফেডারেশনের সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।[5]

আগস্ট, ২০০৪ থেকে জুলাই, ২০১০ পর্যন্ত ধর্মীয় স্বাধীনতা বা বিশ্বাস সম্পর্কীয় জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শ্রীলঙ্কায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্তের জন্য জাতিসংঘের দলে ছিলেন।[6]

অর্জনসমূহ

আসমা বেশকিছু পুরস্কার লাভ করেছেন। তন্মধ্যে ২০১৮ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার পুরস্কার, ২০১৪ সালে রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড, ২০১০ সালে ফ্রিডম পুরস্কার, হিলাল-ই-ইমতিয়াজ, সিতারা-ই-ইমতিয়াজ, রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার, ১৯৯৫ সালে মার্টিন এনালস ও ইউনেস্কো/বিলবাও পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও, ফ্রান্স থেকে অফিসার ডি লা লিজিও ডি’অনার পুরস্কার পেয়েছেন।[7][8] ১০০০ উইম্যান ফর পিস পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ২০০৫ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য তাঁকে মনোনয়ন দেয়া হয়।[9]

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিতা ও এক সন্তান এবং দুই কন্যার জননী ছিলেন। মুনিজাই জাহাঙ্গীর নামীয় কন্যা সাংবাদিক ও সুলেমা জাহাঙ্গীর আইনজীবী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।[10] ‘দ্য হাদুদ অর্ডিন্যান্স: এ ডিভাইন স্যাঙ্কশন’ ও ‘চিলড্রেন অব এ লেজার গড’ শিরোনামে পুস্তক রচনা করেছেন তিনি।[11]

তথ্যসূত্র

  1. "EuropaWorld 9/3/2001"। ২৫ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৫
  2. Prize winner 2002: Asma Jahangir
  3. "Asma Jahangir by Laila Kazmi"। ২৯ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৫
  4. "Asma Jahangir's victory is a cause for celebration"। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৫
  5. Asma Jahangir- WEF
  6. UN appoints panel for inquiry into Sri Lankan human rights violations
  7. Fighting for rights: Asma Jehangir receives French honour
  8. Asma Jahangir – Laureate of the UNESCO/Bilbao Prize for the Promotion of a Culture of Human Rights 2010
  9. "Global Fund for Women"। ৫ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৫
  10. "John Diefenbaker Defender of Human Rights and Freedom Awards"Foreign Affairs and International Trade Canada
  11. Executive Profile Asma Jahangir

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.