আলামোহন দাশ
আলামোহন দাশ বাংলার উদ্যোগপতিদের পথিকৃৎ। স্বাধীনতা পূর্বে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন। এবং পরবর্তী জীবনে সমাজসেবা ও রাজনীতির সাথে যুক্ত হন।
আলামোহন দাশ | |
---|---|
জন্ম | সুরেন্দ্র মোহন দাশ ১৮৯৫ |
মৃত্যু | ১৯৬৯ |
পেশা | উদ্যোগপতি |
প্রাথমিক জীবন
অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার এক নিম্নবিত্ত পরিবারে তাঁর জন্ম।[2] তাঁর আসল নাম সুরেন্দ্র মোহন দাস। ছোটবেলায় গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে গ্রামীণ কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কবিরাজ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার পর দেখা যায় তিনি জীবিত। প্রায় মৃত্যুর দ্বার থেকে ফিরে আসায় তাঁকে 'এলা ছেলে' বলে ডাকা হতো। এই থেকে তাঁর নাম হয় আলামোহন। সংক্রামক রোগে পরিবারের অনেকে মারা যান। দারিদ্র্যের মধ্যে দিয়ে জীবন অতিবাহিত করেন তিনি। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেই ১৪ বছর বয়সে তাঁকে উপার্জনের হাল ধরতে হয়। কলকাতা শহরে মজুর, সেলসম্যান ইত্যাদির কাজ করার পর নিজে খাদ্য শষ্যের দোকান তৈরি করেন। প্রথমে ছোট ব্যবসা করলেও পরে তিনি বৃহৎ শিল্পের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তিনি নিজের পদবিতেই শিল্পশহর দাশনগর গড়ে তোলেন।[3]
শিল্পোদ্যোগ ও সমাজসেবা
আলামোহন মনে প্রানে স্বদেশী ছিলেন। নিজের চেষ্টায় বঙ্কিমচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য পাঠ করেন। বাঙালিদের ব্যবসা বিমুখতা তার মধ্যে ছিলনা। হাওড়া কেমিক্যাল ফ্যাকটরি তার সৃষ্ট প্রথম শিল্পোদ্যোগ। কিছু বাঙালি শুভানুধ্যায়ীদের সাহায্যে তিনি ১৯৩০ সালে তিনি ইন্ডিয়া মেশিনারি কোম্পানি স্থাপন করেন এবং তৎকালীন সরকারী প্রতিবেদন হিসাবে তার এই কারখানা উৎকৃষ্ট মানের দ্রব্য উৎপাদন করতো। মূলত লেদ, ওজন যন্ত্র, ছাপার যন্ত্র তৈরী হত তার কারখানায়।[4] ১৯৩৭ সালে ভারত জুট মিল স্থাপন করেন যা উদ্বোধন করেছিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী তথা উদ্যোগপতি আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। আর্থিক সচ্ছলতা ও লাভের মুখ দেখার পর আলামোহন ১৯৪১ সালে হাওড়া ইনস্যুরেন্স কোম্পানী, ১৯৪২ সালে এশিয়া ড্রাগ কোম্পানী স্থাপন করেন। আরতি কটন মিল, দাস সুগার কোম্পানী তৈরী করা তার অন্যতম কৃতিত্ব। তিনি নিজস্ব ব্যাংকের ব্যবসাও করেছিলেন। বাংলায় তার ব্যাংকের ১২ থেকে ১৪ টি শাখা ছিল। স্কুল, মন্দির নির্মান, পুকুর খনন ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক কাজ করে গেছেন আলামোহন দাশ।[3] তিনি তার গ্রামে পিতার নামে খিলা গোপি মোহন শিক্ষা সদন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
রাজনৈতিক জীবন
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ১৯৫১ সালের প্রথম নির্বাচনে আমতা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রাথী হিসাবে জয়ী হয়েছিলেন আলামোহন দাশ।[5]
তথ্যসূত্র
- "A Nagar Named After Him"।
- "A Nagar Named After Him"।
- Anupam Mukherjee। "A nagar named after him"। telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭।
- Chittabrata Palit, Pranjal Kumar Bhattacharyya। Business History of India। p 244। Google books। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-২৬।
- "Statistical Reports of Elections"। General Election Results and Statistics। Election Commission of India। ২০১০-১০-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-২৫।