আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল

আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল (ইংরেজি: Ireland cricket team) ক্রিকেট দল হিসেবে আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করছে। রাজনৈতিক কারণে আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন ১৯৯৩ সালের পূর্ব পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের অনুমোদন পায়নি। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। আইরিশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে রয়েছে আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন। পেশাদার ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট বিশ্বের অন্যত্র অবস্থানকারী খেলোয়াড়দের নিয়ে দলটি গঠিত হয়েছে। আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়নের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড। ২০০৯ সাল থেকে তারা খেলোয়াড়দের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে।[2] এছাড়াও, ২০১১ সালের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ১৩ খেলোয়াড়কেও পূর্ণাঙ্গভাবে চুক্তিতে এনেছে সংস্থাটি।[3] ২০১৭ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের পূর্ণ সদস্য হিসেবে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড অনুমোদন পায়।

আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল
আইসিসি মর্যাদাপূর্ণ সদস্য (২০১৭) ওডিআই মর্যাদাসহ সহযোগী সদস্য (১৯৯৩)
আইসিসি অঞ্চলইউরোপ
বিশ্ব ক্রিকেট লিগপ্রযোজ্য নয়[N 1]
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
প্রথম আন্তর্জাতিক১০ সেপ্টেম্বর, ১৮৫৫ ব ইংল্যান্ডের ভদ্রলোকগণ, ডাবলিন

টেস্ট কিট

ওডিআই কিট

টি২০আই কিট

২২ জুলাই ২০২২ অনুযায়ী

ইতিহাস

১৮৫৫ সালে আইরিশ দল প্রথম খেলতে নামে। ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতিকে প্রথমবারের মতো অংশ নেয়। এ পর্যন্ত দলটি ৯৬ খেলায় অংশ নিয়ে ৪৪ জয়, ৪৪ পরাজয়, ৫ ফলাফলবিহীন এবং ৩টি খেলায় টাই করে।[4]

আইসিসি’র অন্যতম সহযোগী সদস্য দেশ হিসেবে রয়েছে আয়ারল্যান্ড। টেস্ট ক্রিকেটের পূর্বের দলীয় অবস্থানই সহযোগী সদস্য। আন্তর্মহাদেশীয় কাপ এবং বিশ্বকাপে আইরিশদের দূর্দান্ত সফলতার কারণে দলটি শীর্ষস্থানীয় সহযোগী সদস্য দেশের মর্যাদা পেয়েছে।[5] বর্তমানে আয়ারল্যান্ড প্রথম বিভাগের অন্যতম দল হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক এবং টি২০ আন্তর্জাতিকের মর্যাদাপ্রাপ্ত দল।

সাফল্যগাঁথা

আইসিসি ট্রফি, ইউরোপীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ এবং আইসিসি আন্তর্মহাদেশীয় কাপে অংশ নেয় আইরিশ দল। তন্মধ্যে ইউরোপীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ তিনবার জয় করে ও বর্তমান ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন। ২০০৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত আইসিসি আন্তর্মহাদেশীয় কাপ জয় করেছে তিনবার। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের কাউন্টির ফ্রেন্ডস প্রভিডেন্ট ট্রফিতেও অংশ নিয়েছে তারা।

আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে ১৯২৮, ১৯৬৯ এবং ২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান, বাংলাদেশকে পরাভূত করার পাশাপাশি জিম্বাবুয়ের সাথে টাই করে দ্বিতীয় পর্বে উত্তীর্ণ হয়। এছাড়াও ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল দলটি।

আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দূর্দান্ত সাফল্যে উজ্জ্বীবিত হয়ে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড পূর্ণাঙ্গ সদস্য পদ লাভের জন্য আইসিসি বরাবরে আবেদন করেছে। তারা ২০০৮ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব এবং ২০০৯ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে। এছাড়াও ২০০৯, ২০১০২০১৪ সালের বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতাসহ ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশ নিয়েছে। পূর্ণাঙ্গ সদস্য হলে আয়ারল্যান্ড একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণকারী দেশের মর্যাদা লাভসহ টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারবে।[6]

আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০

দলটি ২০১৩ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাই-পর্বে শীর্ষস্থান অধিকার করে। এরফলে তারা বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো ১৬ দলের অংশগ্রহণে অন্য দশটি পূর্ণাঙ্গ সদস্যদের সাথে অংশগ্রহণ করে। গ্রুপ-পর্বে আইরিশ দল জিম্বাবুয়ে, সংযুক্ত আরব আমিরাতনেদারল্যান্ডস ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

প্রথম খেলায় শক্তিশালী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেটে জয়ী হয়ে চমক দেখায়। ২১ মার্চ, ২০১৪ তারিখে সিলেটে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় গ্রুপ-পর্বে প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৮৯ রানের সম্মানজনক স্কোর দাঁড় করালেও দলটি জয়লাভে সক্ষম হয়নি ও সুপার টেন পর্বে প্রবেশের পূর্বেই প্রতিযোগিতা থেকে দলকে বিদায় নিতে হয়।[7]

প্রতিযোগিতার ইতিহাস

বর্তমান সদস্য

ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সালে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড ২৪জন খেলোয়াড়ের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। নিম্নের তালিকায় ২৪জন খেলোয়াড়সহ গত ১২ মাসে অংশগ্রহণকারী ক্রিকেটারদের তালিকা তুলে ধরা হলো। পূর্ণাঙ্গকালীন খেলার জন্য ক্যাটেগরি এ, এবং খণ্ডকালীন হিসেবে ক্যাটেগরি বি ও সি রয়েছে। ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবে অংশগ্রহণকারীদেরকে ক্যাটেগরি বি চুক্তিতে রাখা হয়েছে।[8]

নির্দেশিকা
  • সি/জি = চুক্তির ধরন
  • এস/এন = ওডিআই ও টুয়েন্টি২০ স্কোয়াড নম্বর
নাম বয়স (২৪ এপ্রিল ২০২৩) ব্যাটিংয়ের ধরন বোলিংয়ের ধরন সি/জি ঘরোয়া দল এস/এন
অধিনায়ক; উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান
উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড৩৮ বছর, ২৩০ দিনবামহাতিডানহাতি অফ-ব্রেকবিওয়ারউইকশায়ার
সহ-অধিনায়ক; অল-রাউন্ডার
কেভিন ও’ব্রায়ান৩৯ বছর, ৫১ দিনডানহাতিডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্টরেলওয়ে ইউনিয়ন২২
ব্যাটসম্যান
জন অ্যান্ডারসন৪০ বছর, ২০০ দিনডানহাতিডানহাতি অফ-ব্রেকসিমেরিয়ন
ক্রিস ডগার্টি৩৫ বছর, ৯৮ দিনবামহাতি সি
এড জয়েস৪৪ বছর, ২১৪ দিনবামহাতিডানহাতি মিডিয়ামবিসাসেক্স২৪
লি নেলসন৩২ বছর, ১৪০ দিনডানহাতিডানহাতি অফ ব্রেকসিওয়ারিংসটাউন
অ্যান্ড্রু পয়েন্টার১,০৩৫ বছর, ৩৬৪ দিনডানহাতিডানহাতি অফ-ব্রেকবিক্লোনটার্ফ
জেমস শ্যানন৩৩ বছর, ৭১ দিনডানহাতিডানহাতি অফ-ব্রেকসিইনস্টোনিয়ান্স
পল স্টার্লিং৩২ বছর, ২৩৩ দিনডানহাতিডানহাতি অফ-ব্রেকবিমিডলসেক্স
অল-রাউন্ডার
অ্যালেক্স কুস্যাক৪২ বছর, ১৭৭ দিনডানহাতিডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্টক্লোনটার্ফ৮৩
জন মুনি৪১ বছর, ৭৩ দিনবামহাতিডানহাতি মিডিয়ামনর্থ কাউন্টি১০
এডি রিচার্ডসন৩২ বছর, ২৭৬ দিনডানহাতিডানহাতি মিডিয়ামবিনর্থ কাউন্টি
স্টুয়ার্ট থম্পসন৩১ বছর, ২৫২ দিনবামহাতিডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্টএগলিনটন১৭
উইকেট-রক্ষক
অ্যান্ড্রু বালবির্নি৩২ বছর, ১১৭ দিনডানহাতিডানহাতি অফ-ব্রেকবিমিডলসেক্স৬৩
নায়ল ও’ব্রায়ান৪১ বছর, ১৬৭ দিনবামহাতি বিলিচেস্টারশায়ার৭৩
স্টুয়ার্ট পয়েন্টার৩২ বছর, ১৮৮ দিনডানহাতি বিডারহাম
গ্যারি উইলসন৩৭ বছর, ৭৮ দিনডানহাতি বিসারে১৪
পেস বোলার
পিটার চেজ২৯ বছর, ১৯৭ দিনডানহাতিডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্টডারহাম২৮
গ্রেইম ম্যাককার্টার৩০ বছর, ১৯৬ দিনডানহাতিডানহাতি মিডিয়ামবিগ্লুচেস্টারশায়ার
টিম মারতাগ৪১ বছর, ২৬৫ দিনবামহাতিডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়ামবিমিডলসেক্স
ম্যাক্স সোরেনসেন৩৭ বছর, ১৫৭ দিনডানহাতিডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়ামদ্য হিলস২৬
ক্রেগ ইয়ং৩৩ বছর, ২০ দিনডানহাতিডানহাতি মিডিয়ামব্রেডি৮৪
স্পিন বোলার
জর্জ ডকরেল৩০ বছর, ২৭৬ দিনডানহাতিস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্সবিসমারসেট৫০
অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রায়ান২৯ বছর, ৩৫৯ দিনবামহাতিডানহাতি অফ-ব্রেকডানমানা৩৫

কোচিং কর্মকর্তা

  • প্রধান কোচ: জন ব্রেসওয়েল
  • ম্যানেজার: রয় টরেন্স
  • সহকারী কোচ: পিটার জনস্টন
  • বোলিং কোচ: ব্রেট লি[9]
  • স্ট্রেন্থ এন্ড কন্ডিশনিং কোচ: ব্রেন্ডন কনর
  • ফিজিও: কিরণ ও’রিলি

তথ্যসূত্র

  1. "Ireland & Afghanistan get 2019 World Cup qualification boost"। BBC Sport। ২৮ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫
  2. "Cricket Ireland announce player contract details"। Cricketeurope4.net। ১৩ জানুয়ারি ২০১০। ২৩ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২
  3. Coverdale, Brydon (৩ মার্চ ২০১১)। "Johnston says Ireland not ready for Tests"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১১
  4. Ireland Playing Record in ODI Matches, CricketArchive Retrieved 2 March 2011.
  5. Martin Williamson (১৭ অক্টোবর ২০০৮), Zimbabwe should avoid another banana skin, Cricinfo Retrieved 3 November 2008.
  6. "Ireland in hot pursuit of Full Member status | Ireland Cricket News | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২
  7. Netherlands stun rivals to qualify, espncricinfo, retrieved: 17 April, 2014
  8. "McBrine, Chase added to Ireland 'A' list"। ESPNcricinfo। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  9. Brett Lee: Ireland appoint ex-Australian star as bowling coach

পাদটীকা

  1. In January 2015, it was announced that Ireland and Afghanistan would join the 10 Test playing nations in a rankings-based qualification for the 2019 Cricket World Cup. As a result, Ireland will no longer take part in the World Cricket League.[1]

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.