আবু সাইয়িদ

অধ্যাপক ডক্টর আবু সাইয়িদ (জন্ম: ১ নভেম্বর, ১৯৪৩) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য,বঙ্গবন্ধু কর্তৃক পাবনা জেলা গভর্নর, তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন; তিনি পাবনা ৮পাবনা ১ আসনের (সাঁথিয়া-বেড়া)সংসদ সদস্য ছিলেন।[1][2]

পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য (এমএনএ)

অধ্যাপক আবু সাইয়িদ
১৯৯৬ সালে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের
মাননীয় তথ্য প্রতিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৩ জুন ১৯৯৬  ১৬ জুলাই ২০০১
পূর্বসূরীনাজমুল হুদা
উত্তরসূরীএম শামসুল ইসলাম
পাবনা-৮ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৭ মার্চ ১৯৭৩  ৬ নভেম্বর ১৯৭৬
প্রধানমন্ত্রীশেখ মুজিবুর রহমান
পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১২ জুন ১৯৯৬  ১৬ জুলাই ২০০১
পূর্বসূরীমতিউর রহমান নিজামী
উত্তরসূরীমতিউর রহমান নিজামী
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1943-11-01) ১ নভেম্বর ১৯৪৩
বৃশালিখা, বেড়া উপজেলা, পাবনা জেলা, বাংলাদেশ
রাজনৈতিক দলনির্বাহী সভাপতি
গণফোরাম
সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মাতাসাইদাতুন নেছা
পিতানজির উদ্দিন সরকার
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ
বেড়া বিবি পাইলট হাই স্কুল

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ১ নভেম্বর ১৯৪৩ সালে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার বৃশালিখা তে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন তার পিএইচডি গবেষণার বিষয় ছিল "ইন্ডিপেন্ডেন্স অফ বাংলাদেশ: এ ডিপলোমেটিক ওয়ার" (বাংলাদেশের স্বাধীনতা: একটি কূটনৈতিক যুদ্ধ)।[3]

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন

অধ্যাপক ড.আবু সাইয়িদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাকসু ভিপি ছিলেন।১৯৭০ সালের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে তিনি এম.এন.এ নির্বাচিত হন । ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সাত নম্বর সেক্টরে উপদেষ্টা ও ক্যাম্প ইনচার্জ ছিলেন। ১৯৭২ সালে গঠিত ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন।[3] এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ মিল্কভিটার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সার্ক -এর তথ্য বিষয়ক কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান।

১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন পাবনা-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।[1] ১৯৭৫ সালে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশাল সরকার কর্তৃক পাবনা জেলার গভর্নর নিযুক্ত হন। অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বাকশালের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন।

১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পাবনা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সপ্তম জাতীয় সংসদে তিনি তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[2] ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ-এর পরিকল্পনা ছিল সাঁথিয়া -বেড়া নির্বাচনী এলাকার বৈপ্লুবিক রূপান্তর ঘটাবেন। হয়েছিলও । থানার সাথে ইউনিয়ন , ইউনিয়ন -এর সাথে গ্রামের সংযোগ তৈরি করা হয়। অবকাঠামো উন্নয়নের এই দৃষ্টান্ত তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান (পরবর্তী সময় রাষ্ট্রপতি) মহান সংসদে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে স্বীকার করেছিলেন।

তিনি ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাকশালের প্রার্থী হিসেবে, ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে, ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম থেকে পাবনা-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে পরাজিত হন। [4]

কুরমাইলঃ দি বেস্ট ক্যম্প

বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ.এইচ. এম কামরুজ্জামান জুন মাসে এক সপ্তাহব্যাপী উত্তরবঙ্গের ক্যম্পগুলো পরিদর্শন করে তৎকালীন সরকারের নিকট একটি লিখিত রিপোর্ট দেন। সরকারি রিপোর্টে কুরমাইল ক্যম্প সম্পর্কে বলা হয়েছে-

On 13.6.71 ''we visited what may be termed the best camp: Kurmail, Present strength 700 .Of these about 400 participanted in guard of honor and listened to the Ministers inspiring speech, drenched in heavy rain. Already 1000 have been sent for training (228+300+400).Trainer EPR.No ration.They procured rice from other side.Operations being conducted from here. Rifles 7-8 hundred.Captain explosives trainer.Major Trainer . Active work by Prof.Abu Sayeed,M.N.A ,camp in charge".

১৩.৬. ৭১ তারিখে ''আমরা যাকে সেরা ক্যাম্প বলা যেতে পারে: কুরমাইল, বর্তমান শক্তি ৭০০ পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে প্রায় ৪০০ জন গার্ড অফ অনারে অংশ নিয়েছিলেন এবং ভারী বৃষ্টিতে ভিজে মন্ত্রীদের অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতা শুনেছিলেন। ইতিমধ্যে ১০০০ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছে (২২৮+৩০০+৪০০)।প্রশিক্ষক ইপিআর।রেশন নেই।তারা অন্যদিক থেকে চাল সংগ্রহ করেছে।এখান থেকে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রাইফেল ৭-৮শত।ক্যাপ্টেন বিস্ফোরক প্রশিক্ষক।মেজর প্রশিক্ষক। অধ্যাপক আবু সাইয়িদ , এমএনএ, ক্যাম্প ইনচার্জের সক্রিয় কাজ"।

টীকাঃ ১.Bangladesh Liberation War and the Nixon White House 1971 , Enayetur Rahim -Joyce L Rahim ,Page:15.

২.হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত 'বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল পত্র' তৃতীয় খন্ড,পৃ.৬০-৬১।

৩. বাংলাদেশের গেরিলা যুদ্ধ, অধ্যাপক ড.আবু সাইয়িদ ,পৃ.২৬-২৭।

গ্রন্থ

অধ্যাপক আবু সাইয়িদের বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • বাংলাদেশের গেরিলা যুদ্ধ
  • ফ্যাক্টস এন্ড ডকুমেন্টস: বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড
  • মেঘের আড়ালে সূৰ্য
  • ছোটদের বঙ্গবন্ধু
  • বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব
  • আঘোষিত যুদ্ধের ব্ল-প্রিন্ট
  • ব্রুটাল ক্রাইমস
  • বাংলাদেশের স্বাধীনতা: যুদ্ধের আড়ালে যুদ্ধ
  • মুক্তিযুদ্ধ: সিক্রেট ডিপ্লোম্যাসি
  • মুক্তিযুদ্ধ: উপেক্ষিত গেরিলা
  • জেনারেল জিয়ার রাজত্ব
  • সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিত ও গোলাম আযম
  • বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঐতিহাসিক রায়
  • যুদ্ধাপরাধ: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
  • বাংলাদেশ থ্রেট অব ওয়ার
  • একাত্তরে বন্দী মুজিব: পাকিস্তানের মৃত্যু যন্ত্রণা
  • সমাজ বদলে বঙ্গবন্ধুর ব্লুপ্রিন্ট
  • মুক্তিযুদ্ধের দলিল লণ্ডভণ্ড এবং অতঃপর
  • বাংলাদেশের স্বাধীনতা: কুটনৈতিক যুদ্ধ
  • ইতিহাসের দায়ভার ও একজন আদুরী
  • তোমার আলোকে রহিব জাগিয়া
  • যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম

তথ্যসূত্র

  1. "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
  2. "৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
  3. "Prof Abu Sayeed attains PhD"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-০৮-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১০
  4. "আবু সাইয়িদ, আসন নং: ৬৮, পাবনা-১"দৈনিক প্রথম আলো। ২৫ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০২০
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.