আবু রুশদ

আবু রুশদ (২৫ ডিসেম্বর ১৯১৯ - ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০) একজন বাংলাদেশী গল্পকার, ঔপন্যাসিক এবং অধ্যাপক ছিলেন। বাংলা সাহিত্যে তার অবদানের জন্য তিনি আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমী পুরস্কার, একুশে পদকসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।

আবু রুশদ
জন্ম
সৈয়দ আবু রুশদ মতিনুদ্দিন

(১৯১৯-১২-২৫)২৫ ডিসেম্বর ১৯১৯
মৃত্যু২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০(2010-02-23) (বয়স ৯০)
মাতৃশিক্ষায়তনএক্সিটার কলেজ, অক্সফোর্ড
আত্মীয়রশীদ করীম (ভাই)
পুরস্কারপূর্ণ তালিকা

প্রাথমিক ও কর্ম জীবন

আবু রুশদ ১৯১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হুগলীর মহসীন কলেজে ইংরেজির প্রভাষক হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন।[1] ১৯৫১ সালে তিনি ইংল্যান্ড যান ও অক্সফোর্ডের এক্সিটার কলেজে ইংরেজি সাহিত্য অধ্যয়ন শুরু করেন। পরে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ, ঢাকা কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, রাজশাহী কলেজ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে শিক্ষকতা করেন।[1] তিনি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক ইন্সট্রাকশন (ডিপিআই) ছিলেন এবং লন্ডনের হাইকমিশনে শিক্ষা কাউন্সেলরের দায়িত্ব পালন করেছেন।[2] তিনি ১৯৮২ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন।[3]

তিনি আশির দশকের মাঝামাঝি সময় বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।[2]

মুক্তিযুদ্ধ

আবু রুশদ ১৯৭১ সালের ৪ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে পাকিস্তান দূতাবাসে কাউন্সেলরের (শিক্ষা ও সংস্কৃতি) দায়িত্ব পালন করার সময় অন্যান্য কর্মীর সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কাজ করেন। তারা ‘বাংলাদেশ মিশন ওয়াশিংটন’ নামে একটি সংহতি সংগঠন গঠন করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন। মুজিবনগর সরকারের পক্ষে তিনি ‘বাংলাদেশ নিউজলেটার’ নামে একটি সাপ্তাহিক প্রকাশের দায়িত্বে ছিলেন।[2]

ব্যক্তিগত জীবন

রুশদ ও তার স্ত্রী (২০০০)

তিনি আজিয়া রুশদকে বিবাহ করেন। তার ভাই রশীদ করীমও একজন ঔপন্যাসিক ছিলেন।

কর্ম

রুশদের প্রথম প্রকাশনা ছিল ছোটগল্পের একটি সংকলন যা ১৯৩৯ সালে প্রকাশিত হয়। ছয়টি উপন্যাস ছাড়াও তিনি ৫০টি ছোটগল্প এবং তিন খণ্ডের আত্মজীবনী রচনা করেছেন। এছাড়া তিনি বাংলা থেকে ইংরেজি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় সাহিত্যকর্ম অনুবাদে দক্ষ ছিলেন। তিনি শেক্সপিয়ারের কবিতা বাংলায় অনুবাদ করেছেন। তার অনুবাদ সংকলন ‘লালনের গান’ ১৯৬৪ সালে বাংলা একাডেমি প্রকাশ করে।[2] তিনি চারটি বাংলাদেশী সংবাদপত্রের নিয়মিত কলাম, মতামত লিখতেন।

উপন্যাস

  • এলোমেলো (১৯৪৬)
  • সামনে নতুন দিন (১৯৫১)
  • ডোবা হলো দীঘি (১৯৬০)
  • নগর (১৯৬৩)
  • অনিশ্চিত রাগিনী (১৯৬৯)
  • স্থগিত দ্বীপ (১৯৭৪)

পুরস্কার

আবু রুশদ ১৯৯৯ সালে একটি পুরস্কার গ্রহণ করছেন।
  • তঘমা-ই-ইমতিয়াজ (১৯৬৩)
  • বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৯৬)[1]
  • হাবিব ব্যাংক পুরস্কার (১৯৭০)
  • একুশে পদক (১৯৮১)[1]
  • আদমজী সাহিত্য পুরস্কার[1]
  • নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৯২)
  • অলক্তা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯২)
  • বাংলা সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৯৩)
  • শেরে বাংলা পুরস্কার (১৯৯২)
  • লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৯২)
  • রোটারী ক্লাব পুরস্কার (১৯৯৫)
  • চট্টগ্রাম সংস্কৃতি কেন্দ্র ফারুখ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯৯)

মৃত্যু

আবু রুশদ ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।[1]

তথ্যসূত্র

  1. "কথাসাহিত্যিক আবু রুশদ আর নেই"bangla.bdnews24.com। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২১
  2. সাদরুল হুদা (২৫ ডিসেম্বর ২০১৯)। "জন্মশতবার্ষিকীর শ্রদ্ধাঞ্জলি"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২১
  3. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করাতে হবে আবু রুশদকে"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২১
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.