আবুল বরকত

আবুল বরকত (১৩ অথবা ১৬ জুন ১৯২৭ – ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২) ছিলেন একজন বাঙালি ভাষা আন্দোলন কর্মী যিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে স্বীকৃতির দাবিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সৃষ্ট বাংলা ভাষা আন্দোলনে ১৯৫২ সালে নিহত হন।[1] বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে শহীদ হিসেবে ভূষিত করা হয়।[2]

আবুল বরকত
জন্ম১৩ অথবা ১৬ জুন ১৯২৭
মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ
মৃত্যু২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২
পরিচিতির কারণভাষা শহীদ
পিতা-মাতাশামসুদ্দিন
হাসিনা বেগম
পুরস্কারএকুশে পদক (২০০০ - মরণোত্তর)

প্রারম্ভিক জীবন

বরকত ১৯২৭ সালের ১৩ জুন (মতান্তরে ১৬ জুন) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর অঞ্চলের বাবলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[3] তার ডাক নাম আবাই। তার পিতার নাম শামসুদ্দিন ও মাতার নাম হাসিনা বেগম। বাবলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। আবুল বরকতের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা হয় বাবলা বহড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি ১৯৪৫ সালে তালিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৪৭ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ভারত বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে তার পরিবার ঢাকাতে চলে আসে। ১৯৫১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে চতুর্থ হয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং একই বিভাগে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন।[3]

ভাষা আন্দোলন

১৯৫২ সালের ভাষা শহীদ আবুল বরকত, রফিক উদ্দিন আহমেদ, আবদুস সালাম, আবদুল জব্বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেন্দ্রে।

বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২-র ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সম্মুখের রাস্তায় ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভ প্রদর্শনরত ছাত্র-জনতার উপর পুলিশ গুলি চালালে হোস্টেলের ১২ নম্বর শেডের বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হন আবুল বরকত।[4] ঢাকা মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি অবস্থায় রাত আটটার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।[5] তার মৃত্যুর পর তার মাতা হাসিনা বেগম ১৯৬৩ সালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন।

মৃত্যু পরবর্তী

২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালের রাতে আবুল বরকতের আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।[3] রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে আবদুস সালাম, রফিক, জব্বার, শফিউর রহমান প্রমুখ শহীদদের অন্যতম তিনি।

সম্মাননা

ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগের জন্য ২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকার বরকতকে একুশে পদক প্রদান করে।[3] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তার স্মরণে ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর নামে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালাটি ২০১২ সালে উন্মুক্ত করা হয় এবং এটি তৈরিতে অর্থ সহায়তা করে ঢাকা সিটি করপোরেশন।[6] তার জীবনী নিয়ে বায়ান্নর মিছিল নামে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে।

চিত্রশালা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "ভাষা সৈনিক শহীদ আবুল বরকত"। বাংলানিউজ২৪.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
  2. "ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা"। একুশে টিভি। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
  3. "বরকত, আবুল"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
  4. "স্মৃতিজাগানিয়া ভাষা জাদুঘর"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
  5. "যেভাবে শহীদ হলেন আবুল বরকত"। এনটিভি। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
  6. "শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর"। এনটিভি। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.