আবুধাবি আমিরাত

আবুধাবি আমিরাত (/ˌæb ˈdɑːbi/, /ˌɑː-/, or /-ˈdæ-/;[3][4] আরবি: إِمَـارَة أَبُـوظَـبِي Imārat Abū Ẓaby, উচ্চারণ [ʔabuː ˈðˤɑbi])[3] হলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাতটি আমিরাতের মধ্যে একটি। আয়তনের দিক দিয়ে এটিই হলো সর্ববৃহৎ আমিরাত। এর আয়তন ৬৭,৩৪০ কিমি (২৬,০০০ মা) যা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মোট আয়তনের প্রায় ৮৭ শতাংশ। জনসংখ্যার দিক দিয়ে সাতটি আমিরাতের মধ্যে আবুধাবির অবস্থান দ্বিতীয়। ২০১১ সালের জুনের হিসাব অনুযায়ী আবুধাবির জনসংখ্যা ছিল ২,১২০,৭০০ জন, যার মধ্যে আমিরাতের নাগরিক ছিলেন মাত্র ৪৩৯,১০০ জন (২১% এরও কম)।[1] আবুধাবি শহর, যার নাম অনুযায়ী আমিরাতের নামকরণ করা হয়েছে, আমিরাত এবং সমগ্র রাষ্ট্র উভয়েরই রাজধানী।

আবুধাবি আমিরাত
إِمَـارَة أَبُـوظَـبِي
আমিরাত
আবুধাবি আমিরাতের পতাকা
পতাকা
আবুধাবি আমিরাতের প্রতীক
প্রতীক
সংযুক্ত আরব আমিরাতে আবুধাবির অবস্থান
সংযুক্ত আরব আমিরাতে আবুধাবির অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩.৫° উত্তর ৫৪.৫° পূর্ব / 23.5; 54.5
দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত
আমিরাতআবুধাবি
যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা ডিসেম্বর ১৯৭১ (1971-12-02)
আসনআবুধাবি
মহকুমা
৩টি পৌর অঞ্চল
  • আবুধাবি (কেন্দ্রীয় অঞ্চল)
  • আল-আইন (পূর্ব অঞ্চল)
  • অধ-ধফরাহ (পশ্চিম অঞ্চল)
সরকার
  ধরনপরম রাজতন্ত্র
  শাসকখলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান
  যুবরাজমোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান
আয়তন
  মোট৬৭,৩৪০ বর্গকিমি (২৬,০০০ বর্গমাইল)
এলাকার ক্রম১ম
জনসংখ্যা (2015)
  মোট২৭,৮৪,৪৯০[1]
  ক্রম২য়
  জনঘনত্ব৩৫.৭/বর্গকিমি (৯২/বর্গমাইল)
বিশেষণআবুধাবিয়
সময় অঞ্চলসংযুক্ত আরব আমিরাত মান সময় (ইউটিসি+০৪:০০)
আইএসও ৩১৬৬ কোডAE-AZ
জিডিপি পিপিপি২০১৪ সালে হিসাব
মোটUSD ১৭৪ বিলিয়ন[2]
মাথাপিছুUSD ১৩০,০০০

১৯৭০ এর দশকের গোড়ার দিকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আবুধাবি আমিরাতের অবস্থানকে প্রভাবিত করেছিল। প্রথমটি ছিল ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে আবু ধাবিকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক রাজধানী বিবেচনা করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠা। দ্বিতীয়টি ছিল ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধের পরে তেলের দামের তীব্র বৃদ্ধি, যা তেলসমৃদ্ধ দেশ এবং বিদেশী তেল কোম্পানিগুলোর মধ্যে সম্পর্কের পরিবর্তনের সাথে সাথে তেলের রাজস্ব নাটকীয়ভাবে বাড়িয়ে তোলে।[5] ২০১৪ সালে আবুধাবির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ছিল বর্তমান দাম অনুযায়ী ৯৬০ বিলিয়ন দিরহাম (০.২৪ ট্রিলিয়ন ইউরো)। জিডিপি এর সিংহভাগ (২০১১ সালে ৫৮.৫ শতাংশ) আসে অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের খননের মাধ্যমে। নির্মাণ-সংক্রান্ত শিল্পগুলি দ্বিতীয় বৃহত্তম অবদানকারী (২০১১ সালে ১০.১ শতাংশ)।[1] ২০১২ সালে জিডিপি বৃদ্ধি পেয়ে ৯১১.৬ বিলিয়ন দিরহাম হয়, এবং মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় $১,০০,০০০ মার্কিন ডলার এর থেকেও বেশি।[6] সাম্প্রতিক সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জিডিপির প্রায় ৬০ শতাংশ অবদান রেখেছে আবুধাবি আমিরাত, যেখানে ২০০৫ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী আবুধাবি আমিরাতের জনসংখ্যা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩৪ শতাংশ।[5]

ব্যুৎপত্তি

"ধাবি" হলো স্থানীয় হরিণের একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির আরবি নাম যা একসময় আরব অঞ্চলে প্রচলিত ছিল। আবু ধাবি মানে "ধাবি" (হরিণ) এর জনক। মনে করা হয় যে এই অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে হরিণের কারণে এবং শখবুত বিন ধিয়াব আল নাহিয়ানের সাথে জড়িত একটি লোককাহিনী বলেই এই নামটি এসেছে।[7]

ইতিহাস

আবুধাবির আল-হোসন ফোর্ট, খ্রিষ্টাব্দ ১৮শ শতকে নির্মিত

আবুধাবির কিছু অংশে সহস্রাব্দ আগে বসতি স্থাপন করা হয়েছিল। আমিরাত আল-বুরাইমী বা তাওয়ামের ঐতিহাসিক অঞ্চল (যার মধ্যে রয়েছে আধুনিক সময়ের আল আইন) ওমানের সাথে ভাগ করে নেয়।[8][9][10][11] এটি ৭০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অধিষ্ঠিত হিসাবে প্রদর্শিত হয়েছে।[12] আধুনিক আবুধাবির সূত্রপাত ১৮শ শতাব্দীর শেষের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজাতীয় মৈত্রী বাণী ইয়াসের উত্থানের মাধ্যমে হয়েছিল, যা দুবাইয়ের নিয়ন্ত্রণও গ্রহণ করেছিল। উনিশ শতকে দুবাই ও আবুধাবি শাখা আলাদা হয়ে যায়।

বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে আবুধাবির অর্থনীতি মূলত উটের পাল, আল-আইন এবং লিওয়ার অভ্যন্তরীণ মরুদ্যানে খেজুর এবং শাক-সবজি উৎপাদন এবং আবুধাবি শহরের উপকূলে মাছ ধরা ও মুক্তা সংগ্রহের মাধ্যমে টিকে রয়েছিল, যা মূলত গ্রীষ্মকালীন মাসগুলোর উপর নির্ভরশীল ছিল। এই সময়ে আবুধাবি শহরের বেশিরভাগ বাসস্থান ছিল পাম গাছের পাতা (বারস্তি) দিয়ে নির্মিত, যেখানে ধনী পরিবারগুলি কাদা দিয়ে নির্মিত কুটিরে বসবাস করত। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে মুক্তো উৎপাদন শিল্পের বিকাশ আবুধাবির বাসিন্দাদের জন্য খারাপ সময় ডেকে এনেছিল কারণ মুক্তো রফতানি করাই তাদের নগদ উপার্জনের বৃহত্তম এবং প্রধান উৎস ছিল।

১৯৩৯ সালে শেখ শাখবুত বিন সুলতান আল নাহিয়ান পেট্রোলিয়াম অনুমোদন দিয়েছিলেন এবং ১৯৫৮ সালে প্রথম তেল পাওয়া যায়। প্রথমদিকে, তেলের অর্থের একটি প্রান্তিক প্রভাব পড়েছিল। কয়েকটি ক্ষুদ্র কংক্রিট ভবন নির্মিত হয়েছিল এবং ১৯৬১ সালে প্রথম পাকা রাস্তা সম্পন্ন হয়েছিল, তবে শেখ শাকবুত নতুন তেল রাজস্ব টিকে থাকবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চিত ছিলেন, এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিবর্তে রাজস্ব বাঁচানোর পন্থা অনুসরণ করেন।

শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান, আবুধাবির আমির এবং ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা (১৯৬৭ এর স্ট্যাম্প)

তার ভাই শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান দেখলেন যে তেলের সম্পদে আবুধাবি রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্ষমতাসীন নাহিয়ান পরিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে শেখ জায়েদের উচিত তার ভাইকে শাসক হিসাবে প্রতিস্থাপন করা এবং দেশের উন্নয়নের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা।[13]

যুক্তরাজ্য ১৯৬৮ সালে ঘোষণা দেয় যে ১৯৭১ সালের মধ্যে পারস্য উপসাগর অঞ্চল থেকে তারা সরে আসবে। এর মাধ্যমে শেখ জায়েদ সংযুক্ত আরব আমিরাত গঠনের পিছনে মূল চালিকা শক্তি হয়ে উঠেন। একাত্তরে আমিরাত স্বাধীনতা অর্জনের পরে, তেলের সম্পদ এই অঞ্চলে প্রবাহিত হতে থাকে, এবং ঐতিহ্যবাহী কাদা-ইটের কুটিরগুলি দ্রুত ব্যাংক, বুটিক এবং আধুনিক অট্টালিকা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হতে থাকে।

তথ্যসূত্র

  1. "Statistics Center"। সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৯, ২০১৯
  2. "Archived copy"। মে ২৫, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৮
  3. Wells, John C. (২০০৮), Longman Pronunciation Dictionary (3rd সংস্করণ), Longman, আইএসবিএন 978-1-4058-8118-0
  4. Roach, Peter (২০১১), Cambridge English Pronouncing Dictionary (18th সংস্করণ), Cambridge: Cambridge University Press, আইএসবিএন 9780521152532
  5. "Abu Dhabi Over a Half Century"। Statistics Centre - Abu Dhabi (SCAD)। সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৯, ২০১৯
  6. "Abu Dhabi's GDP rises 7.7%, population reaches 2.3m"। জানুয়ারি ১২, ২০১৪। জানুয়ারি ১৫, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৪
  7. "United Arab Emirates"। জুলাই ২১, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৯, ২০১৯
  8. Al-Hosani, Hamad Ali (২০১২)। The Political Thought of Zayed bin Sultan Al Nahyan (পিডিএফ) (গবেষণাপত্র)। Durham University। পৃষ্ঠা 43–44। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (PhD Thesis) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৬
  9. Morton, Michael Quentin (১৫ এপ্রিল ২০১৬)। Keepers of the Golden Shore: A History of the United Arab Emirates (1st সংস্করণ)। London: Reaktion Booksআইএসবিএন 978-1-7802-3580-6। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১৬
  10. Allen, Calvin H., Jr. (২০১৬-০২-০৫)। "1: Land and People"। Oman: the Modernization of the Sultanate। Abingdon / New York City: Routledge। পৃষ্ঠা 1–8। আইএসবিএন 978-1-3172-9164-0।
  11. Janet L. Abu-Lughod (contributor) (২০০৭)। "Buraimi and Al-Ain"। Dumper, Michael R.T.; Stanley, Bruce E.। Cities of the Middle East and North Africa: A Historical EncyclopediaABC-CLIO। পৃষ্ঠা 99–100। আইএসবিএন 978-1-5760-7919-5।
  12. Salama, Samir (ডিসেম্বর ৩০, ২০১১)। "Al Ain bears evidence of a culture's ability to adapt"Gulf News। জুলাই ১৬, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৭, ২০১৮
  13. Al-Fahim, M. (১৯৯৫)। "6"। From Rags to Riches: A Story of Abu DhabiLondon Centre of Arab Studiesআইএসবিএন 1-900404-00-1।

বহিঃসংযোগ

সংবাদপত্র

টেমপ্লেট:আবুধাবি

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.