আবদুল হালিম (বীর প্রতীক)
আবদুল হালিম (জন্ম: ৩০ জুন, ১৯৩৩) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [1]
আবদুল হালিম | |
---|---|
জন্ম | ৩০ জুন, ১৯৩৩ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
দাম্পত্য সঙ্গী | হাজেরা বেগম |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
আবদুল হালিমের বাড়ি নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার পরকোট ইউনিয়নের দক্ষিণ রায়দেবপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আহমদ আলী পালোয়ান এবং মায়ের নাম জরিনা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম হাজেরা বেগম। এ দম্পতির পাঁচ ছেলে, এক মেয়ে। [2]
কর্মজীবন
আবদুল হালিম ১৯৭১ সালে দিনাজপুর ইপিআর হেডকোয়ার্টারে কর্মরত ছিলেন। ২৮ মার্চ বেলা ৩টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি দল দিনাজপুর সেক্টর হেডকোয়ার্টারে আক্রমণ করে। এরপর ইপিআররাও পাকিস্তানিদের পাল্টা আক্রমণ করে। আবদুল মজিদ ছিলেন এন্টিট্যাংক গানচালক। তিনি সে সময় পাকিস্তানি অবস্থানে গোলাবর্ষণ করেন। পরে তারা হেডকোয়ার্টার থেকে বেরিয়ে এসে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। ইপিআরদের প্রথম প্রতিরোধ পাকিস্তানিরা দিনাজপুর থেকে ৩১ মার্চ পালিয়ে যায়।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
১৯৭১ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি রংপুর-সৈয়দপুর-দিনাজপুর সড়কের দশ মাইল এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন একদল প্রতিরোধ যোদ্ধা। দলে ছিলেন ইপিআর, ছাত্র ও যুবক। এই দলের সঙ্গে ছিলেন ইপিআরের আবদুল হালিম। তিনি ছিলেন সিক্স পাউন্ডার গান অপারেটর। সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে এগিয়ে আসছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি বহর। এই বহরে আছে ট্যাংক, আর্টিলারি গান ও ২৬ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স (এফএফ)। মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানিদের সামরিক শক্তি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কয়েক গুণ। তারপরও প্রতিরোধ যোদ্ধারা তাদের আক্রমণ করলেন। শুরু হলো তুমুল যুদ্ধ। কিন্তু সে দিনের এই যুদ্ধ ছিল অসম যুদ্ধ। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ট্যাংক ও আর্টিলারির ব্যাপক গোলার সামনে প্রতিরোধ যোদ্ধারা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। এক পর্যায়ে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যেতে বাধ্য হন। ১৬ এপ্রিল দিনাজপুরের পতন হয়। দিনাজপুরের পতন হলে আবদুল হালিম আর মূল দলে যোগ দিতে পারেননি। তিনি কয়েকজনের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এরপর তারা ভারতে যান। ভারত থেকে পরে তিনি নিজ এলাকায় চলে আসেন। আবদুল হালিম পরবর্তীতে দুই নং সেক্টরের রাজনগর সাবসেক্টর এলাকায় যুদ্ধ করেন। গণবাহিনীর একটি দলের সঙ্গে তিনি ছিলেন। এই দলের দলনেতা ছিলেন আবদুর রব চৌধুরী। তিনি ছিলেন সহদলনেতা। তারা নোয়াখালী জোর রায়গঞ্জ ও দত্তপাড়াসহ আরো কয়েক স্থানে পাকিস্তানি বাহিনী বা তাদের সহযোগী রাজাকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। দত্তপাড়ার যুদ্ধে স্থানীয় রাজাকার কমান্ডার ননী চেয়ারম্যান তাদের হাতে নিহত হয়। [3]
পুরস্কার ও সম্মাননা
তথ্যসূত্র
- "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না", দৈনিক প্রথম আলো, তারিখ: ০৮-০৫-২০১১
- একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৪৯। আইএসবিএন 9789843351449।
- একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৬৪। আইএসবিএন 9789843338884।