আফগানিস্তানের পরিবহন ব্যবস্থা
রুক্ষ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য এবং যথাযথ পরিবহন কাঠামোর অভাবে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে ভ্রমণ অত্যন্ত দুরূহ। দেশের প্রায় ২৪ শতাংশ রাস্তা কাঁচা। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি বৃত্তাকারে প্রধান প্রধান শহরগুলিকে সংযুক্ত করেছে। কাবুল থেকে শুরু হয়ে এই মহাসড়কটি উত্তরে সালাং সুড়ঙ্গের ভিতর দিয়ে গিয়ে তাশকুরঘান যায়, তারপর পশ্চিমে মাজরে শরীফ হয়ে মেইমানেহ ও হেরাতে পৌঁছে; এরপর এটি দক্ষিণ-পুর্বে মোড় নিয়ে কান্দাহার যায় ও তারপর আবার উত্তর-পূর্বে গিয়ে কাবুলে ফেরত আসে। আফগানিস্তানের সড়ক ব্যবস্থা দেশটিকে পাকিস্তানের সাথে সংযুক্ত করেছে। উত্তরে জালালাবাদ ও পাকিস্তানের পেশওয়ার শহর সংযুক্ত, অন্যদিকে দক্ষিণে কান্দাহার ও চামান শহর সংযুক্ত। আরেকটি বড় রাস্তা হেরাত থেকে ইরানে প্রবেশ করেছে। যুদ্ধের কারণে অনেক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাবুল ও দেশের উত্তরের সাথে যোগসূত্র স্থাপনকারী সালাং সুড়ঙ্গ ১০ বছর বন্ধ থাকার পর ২০০২-এর শুরুতে আবার খুলে দেয়া হয়।

কিছু কিছু রাস্তা শীতকালে ও বসন্তকালে বরফ পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। শহরগুলিতে তিন চাকার অটোরিক্সা সাধারণ যানবাহন। অনেক জায়গায় ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করা হয়। গ্রামাঞ্চলে আফগানিরা পায়ে হেঁটে, গাধা বা ঘোড়ার কিংবা মাঝে মাঝে উটের পিঠে চড়ে ভ্রমণ করে। আফগানিস্তানের কোন সমুদ্র বন্দর নেই, তাই স্থলপথেই অন্যান্য দেশের সাথে আমদানি-রপ্তানি সম্পন্ন হয়। রেল পরিবহন নগণ্য, তাই দেশের ভেতরে মাল পরিবহন মূলত সড়কপথেই সম্পন্ন হয়।
নদী পরিবহন মূলত আমু দরিয়া নদীতেই সীমাবদ্ধ। আমু দরিয়ার ওপর কেলেফ্ত, খয়রাবাদ ও শির খান নদীবন্দরগুলি অবস্থিত।
কাবুল ও কান্দাহারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে। ২০০১ সালে মার্কিনী বোমা হামলায় কাবুল বিমানবন্দর ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু পুনর্নির্মাণ প্রকল্পে এটিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। বর্তমানে বহির্বিশ্বের সাথে এই বিমানবন্দরই আফগানিস্তানের যোগসূত্র। দেশের ভেতরে আরও কিছু ছোট ছোট বিমানবন্দর আছে। আরিয়ানা আফগান এয়ারলাইন্স জাতীয় বিমান সংস্থা। প্রথম বেসরকারী বিমান সংস্থা কাম এয়ার ২০০৩ সালে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল শুরু করে।