আদি পুস্তক
আদি পুস্তক (ল্যাটিন ভাষায়ঃ Vulgate, অনুকরণ বা লিপান্তরিত করা হয়েছে গ্রিক শব্দঃ γένεσις হতে, অর্থঃ "আদি"; হিব্রু ভাষায়ঃ בְּרֵאשִׁית, Bərēšīṯ, "সূচনায়") হিব্রু বাইবেল (তানাখ) ও খ্রিস্টীয় পুরাতন নিয়মের প্রথম পুস্তক।[1] একে দুইটি অংশে ভাগ করা যায়, প্রারম্ভিক ইতিহাস(অধ্যায় ১-১১) ও বংশানুক্রমিক ইতিহাস (অধ্যায় ১২-৫০)।[2] আদি ইতিহাসে স্রষ্টার সাথে দেবতা এবং মানবজাতির সম্পর্কের প্রকৃতি সম্বন্ধে লেখক(দের) ধারণা সজ্জিত হয়েছেঃ প্রভু জগত সৃষ্টি করেছেন যা মানবজাতির জন্য অনুকূল ও মানানসই, কিন্তু যখন মানুষ পাপের দ্বারা একে দূষিত করে ফেলে ,তখন প্রভু তার সৃষ্টিকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেন, কেবলমাত্র সত্যপন্থী নূহকে রক্ষা করেন, যাতে করে প্রভু ও মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা যায়।[3] বংশানুক্রমিক ইতিহাসে (অধ্যায় ১২-৫০) প্রাগৈতিহাসিক ইসরাইল ও প্রভুর বাছাইকৃত লোকদের কথা বলা হয়েছে।[4] প্রভুর নির্দেশে নূহের বংশধর ইব্রাহিম নিজ আবাস থেকে কেনানে যাত্রা করেন। এটি প্রভুর পক্ষ থেকে তাকে দেওয়া হয়, যেখানে তিনি একজন বিদেশি হিসেবে বসবাস শুরু করেন, তদ্রূপ তার সন্তান ইসহাক ও পৌত্র ইয়াকুব ও। ইয়াকুবের নাম পরিবর্তিত হয়ে ইসরাইল হয় এবং তার পুত্র ইউসুফের মাধ্যমে ইসরাইলের পুত্রগণ মিশরে প্রবেশ করেন, যারা স্বপরিবারে মোট সত্তর জন ছিলেন। প্রভু তাদেরকে মহান এক ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দেন। ইসরাইল মিশরে পৌঁছানোর মাধ্যমে আদি পুস্তকের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং মূসার আগমন ও যাত্রাপুস্তকের প্রস্তুতি শুরু হয়।এই আখ্যানে প্রভূর সাথে কতগুলো অঙ্গীকার পরম্পরার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যা ক্রমান্বয়ে সমগ্র মানবজাতি (নূহের সাথে কৃত অঙ্গীকারনামা) থেকে সংকুচিত হয়ে একটিমাত্র সম্প্রদায়ে (ইব্রাহিম এবং ইসহাক,ইয়াকুবের মাধ্যমে তার বংশধরদের) সাথে বিশেষ সম্পর্কে পরিণত হয়।[5]
তানাখ (ইহুদি ধর্ম) | |||||
---|---|---|---|---|---|
|
|||||
পুরাতন নিয়ম (খ্রীষ্টধর্ম) | |||||
|
|||||
বাইবেল প্রবেশদ্বার | |||||
ইহুদি ধর্মে, আদিপুস্তকের আধ্যাত্মিক গুরুত্ব অঙ্গীকারনামাগুলোকে কেন্দ্র করে, যা প্রভুকে তার বাছাইকৃত এবং প্রতিশ্রুত ভূমির লোকদের সাথে সম্পর্কযুক্ত করে। খ্রিস্ট ধর্ম আদিপুস্তককে ব্যাখ্যা করেছে তাদের একান্ত খ্রিস্টীয় মৌলিক বিশ্বাসগুলোর পূর্বভিত্তি হিসেবে, যেগুলোর মধ্যে প্রাথমিকভাবে রয়েছে পরিত্রাণের (সকল খ্রিস্টানের আশা ও প্রতিশ্রুতি) প্রয়োজনীয়তা এবং ক্রুশের উপর খ্রিস্ট কর্তৃক সংঘটিত পুনরুদ্ধার কর্ম, যাতে করে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে অঙ্গীকারনামার প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়।
ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বাস করা হয়, মূসা আদি পুস্তকের পাশাপাশি যাত্রা পুস্তক, লেবীয় পুস্তক, গণনা পুস্তক এবং দ্বিতীয় বিবরণের অধিকাংশ অংশের লেখক। তবে,আধুনিক পণ্ডিতগণ দিন দিন এগুলোকে খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ ও ৫ম শতকের কাজ হিসেবে দেখছেন।[6][7]
গঠন
আদি পুস্তককে আবৃত্ত বাক্যাংশ "elleh toledot"কে ঘিরে গড়ে উঠতে দেখা যায়,অর্থঃ "এ হল সৃষ্টিকাহিনী", প্রথম এই বাক্যাংশ, যা নির্দেশ করে "আকাশ ও পৃথিবীর উদ্ভব",ব্যবহারের মাধ্যমে, এবং অবশিষ্টাংশ ব্যক্তিদের লিপিবদ্ধকরণের মাধ্যমে-নূহ, "নূহের পুত্রগণ", সাম প্রভৃতি, নিচের দিকে ইয়াকুব পর্যন্ত।[8] যাহোক,এটা স্পষ্ট নয় যে, মূল লেখকদের কাছে এর অর্থ কি, এবং অধিকাংশ আধুনিক ভাষ্যকার একে বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে দুই ভাগে ভাগ করেন, একটা "প্রারম্ভিক ইতিহাস"(অধ্যায় ১-১১) ও একটা "নবীদের কাহিনী"(অধ্যায় ১২-৫০)।[9] যদিও প্রথমাংশ দ্বিতীয়াংশের তুলনায় অত্যধিক সংক্ষিপ্ত, এতে মৌলিক বিষয়গুলো সাজানো আছে এবং এটা সমগ্র পুস্তক বোঝার ক্ষেত্রে একটা ব্যাখ্যামূলক সমাধান প্রদান করে।[10] "প্রারম্ভিক ইতিহাস" এর একটা প্রতিসম কাঠামো আছে যা অধ্যায় ৬-৯ এ সংযুক্ত রয়েছে, প্লাবনের কাহিনী, প্লাবনের পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোকে পরবর্তী ঘটনাগুলো দ্বারা প্রতিফলিত করার মাধ্যমে;[11] "বংশানুক্রমিক ইতিহাস" গঠিত হয় তিনজন নবী ইব্রাহিম,ইয়াকুব ও ইউসুফকে ঘিরে।[12] (ইসহাকের আখ্যানগুলো সুসংগত একটি কাহিনীবৃত্ত গঠন করেনা বরং ইব্রাহিম ও ইয়াকুবের সময়কালের মাঝে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে)।[13]
সার-সংক্ষেপ
ঈশ্বর জগত সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে এবং সপ্তম দিবসকে পবিত্র করেছেন বিশ্রাম দিবস (সাব্বাথ) হিসেবে। ঈশ্বর প্রথম মানব-মানবী আদম ও ইভ (ইসলামেঃ হাওয়া) কে সৃষ্টি করেন এবং স্বর্গের বাগানে সকল প্রকার প্রাণী সৃষ্টি করেন, কিন্তু নির্দেশনা দেন যেন তারা ভাল-মন্দের জ্ঞানবৃক্ষের ফল না খায়। একটি বাকসম্পন্ন সরীসৃপ, যা বিভ্রান্তিকর জীব বা প্রতারক হিসেবে বর্ণিত, ইভকে যেকোনো মূল্যে ফল খেতে প্রলোভন দেখায়, এবং সে (ইভ) আদমকে প্রলোভিত করে, যার ফলে ঈশ্বর তাদেরকে স্বর্গ থেকে বের করে দেন এবং তাদেরকে অভিসম্পাত করেন - আদমকে কেবল ঘাম ও কায়িক পরিশ্রমের দ্বারা তার প্রয়োজন মেটাতে এবং ইভকে প্রসব বেদনা সহ্য করতে হবে। খ্রিস্টানগণ একে মানবজাতির পতন হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। ইভ দুটি পুত্রসন্তান ধারণ করেন, কাইন (ইসলামেঃ কাবিল) ও আবেল(ইসলামেঃ হাবিল)। কাইন আবেলকে হত্যা করে, যখন ঈশ্বর কাইনের নৈবেদ্য মঞ্জুর না করে আবেলেরটা মঞ্জুর করেন। ইভ আরো একটি পুত্রের জন্ম দেন,সেথ (ইসলামেঃ শীস), আবেলের প্রতিস্থাপন হিসাবে।
আদমের মৃত্যুর পর কাইন ও সেথের বংশধারা চলেছে বহু প্রজন্ম, মানুষের পাপ ও দিব্যপুরুষ বা দেবপুত্রদের (ইংরেজিঃ nephilim, হিব্রুঃ נְפִילִים, nefilim, অর্থঃ মহাপ্লাবনের পূর্বে ঈশ্বর সন্তানদের সাথে মনুষ্য কন্যাদের মিলনের ফলে যে বংশধর) দ্বারা পৃথিবী দূষিত হয়ে পড়ে, এবং ঈশ্বর মানবজাতিকে মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে তিনি সত্যপন্থী নূহ ও তার পরিবারকে একটি বিশাল নৌকা তৈরির ও তাতে সকল প্রজাতির প্রাণীর নমুনা রাখার নির্দেশনা দেন। অতঃপর ঈশ্বর সারা বিশ্ব ধ্বংসকারী এক মহাপ্লাবন পাঠান। পানি সরে গেলে,ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দেন যে, তিনি দ্বিতীয়বার কখনো পানি দ্বারা পৃথিবী ধ্বংস করবেন না এবং রংধনুকে তার প্রতিশ্রুতির নিদর্শন বানান। কিন্তু মানুষকে একটি বিশাল উঁচু মিনারওয়ালা শহর, বাবেল মিনার তৈরিতে পরস্পর সহায়তা করতে দেখে, ঈশ্বর মানবজাতিকে বহু ভাষায় বিভক্ত করে দিলেন এবং তাদেরকে দ্বিধান্বিত অবস্থায় ছড়িয়ে দিলেন।
ঈশ্বর আব্রামকে মেসোপটেমিয়ায় তার নিবাস ছেড়ে কেনানে গমনের নির্দেশ দেন। সেখানে ঈশ্বর আব্রামের সাথে অঙ্গীকার করেন, এই প্রতিশ্রুতি যে তার বংশধরেরা সংখ্যায় তারকারাজির ন্যায় হবে, তবে এই লোকেরা ভিনদেশে চারশত বছর নির্যাতন ভোগ করবে, যার পরে তারা মিশরের নদী থেকে শুরু করে মহানদী ফোরাত(ইউফ্রেটিস) পর্যন্ত সমগ্র ভূভাগের উত্তরাধিকারী হবে। আব্রামের নাম পরিবর্তিত হয়ে আব্রাহাম(ইসলামেঃ ইব্রাহিম) হয় এবং স্ত্রীর নাম সারাই থেকে সারাহ হয়,এবং সকল পুরুষের লিঙ্গাগ্রচর্মচ্ছেদন (খৎনা)-কে প্রবর্তন করা হয় অঙ্গীকারনামার নিদর্শন হিসেবে। নিজের বার্ধক্যের কারণে, সারাহ ইব্রাহিমকে তার মিশরীয় দাসী, হাজেরাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে বলে। হাজেরার মাধ্যমে ইব্রাহিম ইসমাইলের পিতা হন।
সদোম ও গমোরা নগরীর লোকদের পাপাচারের দরুণ ঈশ্বর নগরীদুটি ধ্বংসের স্বংকল্প করেন। ইব্রাহিম এর প্রতিবাদ করেন এবং ঈশ্বরের এই সম্মতি পান যে,যদি ১০জন সত্যপন্থী মানুষ পাওয়া যায় তবে নগরীদ্বয় ধংস করা হবে না। ফেরেশতাগণ ইব্রাহিমের ভাতিজা লূত ও তার পরিবারকে রক্ষা করেন, কিন্তু লূতের স্ত্রী তাদের আদেশ অমান্য করে পেছনের ধ্বংসযজ্ঞের দিকে ফিরে তাকালো এবং লবণের স্তম্ভে পরিণত হল। লূতের কন্যাগণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ল এই ভেবে যে, তারা পলাতক, কাজেই তারা আর কখনোই স্বামী পাবেনা। তারা লূতকে নেশাগ্রস্ত করল, যাতে তার দ্বারা গর্ভধারণ করতে পারে এবং জন্ম দিতে পারে মোয়াবীয় ও আমোনীয় পূর্বপুরুষদের।
ইব্রাহিম ও সারাহ ভাই-বোন (তারা সৎ ভাইবোন) হওয়ার ভান করে ফিলিস্তিনী শহর গেরারে যান। গেরারের রাজা সারাহকে তার স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে, কিন্তু ঈশ্বর তাকে সতর্ক করে সারাহকে ফেরত পাঠাতে বলেন, এবং সে তা মেনে নেয়। ঈশ্বর সারাহকে ইসহাক নামের একটি পুত্র সন্তান দান করেন, যার মাধ্যমে অঙ্গীকারনামা প্রতিষ্ঠিত হবে। সারাহর জেদে, ইসমাইল ও তার মা হাজেরাকে মরুভূমিতে নির্বাসিত করা হয়, কিন্তু ঈশ্বর তাদের রক্ষা করেন এবং ইসমাইল থেকে এক মহান জাতি তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন।
ঈশ্বর ইসহাকের বিসর্জন দাবি করে ইব্রাহিমকে পরীক্ষা করেন। যখন ইব্রাহিম ছুরিটি পুত্রের উপর প্রায় প্রয়োগ করতে যাবেন,ঈশ্বর তাকে সংযত করলেন, প্রতিশ্রুতি দিলেন অগণিত বংশধরদের। সারাহের মৃত্যুতে, ইব্রাহিম মাখপেলায়] (বর্তমান হেব্রোন বলে অনুমান করা হয়) পারিবারিক সমাধিস্থল ক্রয় করেন এবং কর্মচারীকে মেসোপটেমিয়ায় তার আত্মীয়দের মধ্য থেকে ইসহাকের জন্য পাত্রী খুঁজতে পাঠান, এবং রেবেকাকে বাছাই করা হয়। ইব্রাহিমের অন্যান্য সন্তানেরা, অপর স্ত্রী কাতুরাহর মধ্য দিয়ে জন্ম গ্রহণ করে, যাদের বংশধরদের মধ্যে রয়েছে মিদিয়ানীয়রা, এবং অবশেষে বার্ধক্যজনিত কারণে তার মৃত্যু হয় ও হেব্রোনের সমাধিস্থলে তাকে দাফন করা হয়।
ইসহাকের স্ত্রী একজোড়া জমজ সন্তানের জন্ম দিল, এসৌ, এদোমীয়দের পিতা এবং ইয়াকুব। প্রতারণার মাধ্যমে এসৌয়ের পরিবর্তে ইয়াকুব উত্তরাধিকারী হন এবং পিতার আশীর্বাদ লাভ। সে মামার কেছে পলায়ন করে যেখানে সে উন্নতি লাভ করে দুইজন স্ত্রী লাভ করেন,রাখেল ও লিয়া। ইয়াকুবের নাম পরিবর্তিত হয়ে ইসমাঈল হয়, এবং স্ত্রী ও দাসীদের মাধ্যমে তার পুত্রসংখ্যা হয় ১২জন, ইসরাইলীয় সন্তানদের ১২টি গোত্রের পূর্বপুরুষ, এবং একটি কন্যা, দীনা।
ইউসুফ, ইয়াকুবের প্রিয় পুত্র, তার ঈর্ষাপরায়ণ ভাইয়েরা তাকে মিশরে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেয়। কিন্তু অনেক কষ্টের পর,ঈশ্বরের সহায়তায়, ফারাওয়ের আসন্ন দুর্ভিক্ষের স্বপ্ন ব্যাখ্যার মাধ্যমে উন্নতি লাভ করেন। অতঃপর তিনি পিতা ও ভাইয়েদের সাথে পুনরায় মিলিত হন,যারা তাকে চিনতে ব্যর্থ হয়, এবং খাদ্যের জন্য ওজর পেশ করে। অনেক কৌশলের পর,তিনি নিজের পরিচয় দেন এবং তাদেরকে তাদের গৃহস্থালি সহ মিশরে প্রবেশ করান, যেখানে ফারাও তাদের জন্যে গোশেনের ভূমি নির্দিষ্ট করে দেয়। ইয়াকুব পুত্রদেরকে শয্যাপাশে ডেকে পাঠান এবং মৃত্যুর পূর্বে তাদের ভবিষ্যত ব্যক্ত করেন। ইউসুফ বার্ধক্য পর্যন্ত জীবিত থাকেন এবং ভাইদের কাছে মিনতি জানান, ঈশ্বর যদি তাদেরকে এদেশ হতে বের করেন,তারা যেন তার হাড়গুলো সাথে করে নিয়ে যায়।
বিস্তারিত
নামকরণ ও লিখিত প্রমাণাদি
আদি পুস্তকের হিব্রু শিরোনাম, প্রথম বাক্যের প্রথম শব্দ, Bereshit,থেকে নেয়া হয়েছে,যার অর্থ "সূচনায়/আদিতে"; ইহুদি বাইবেলের গ্রিক সংস্করণে (septuagint বা সত্তরের কর্ম) এর নামকরণ করা হয়ঃ জেনেসিস, যা এসেছে "দ্য জেনারেশন্স অব হেভেন অ্যান্ড আর্থ" বাক্যাংশ থেকে। পুস্তকটির প্রধান চারটি লিখিত দলিল হলোঃ মেসোরিটিক পাঠ,সামেরীয় পঞ্চপুস্তক, ইহুদি বাইবেলের গ্রিক অনুবাদের পাণ্ডুলিপি (septuagint manuscripts)], এবং কুমরানে (পশ্চিম তীরে অবস্থিত প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা) পাওয়া আদি পুস্তকের খণ্ডগুলো। কুমরানের খণ্ডগুলোই সবচেয়ে প্রাচীন পাণ্ডুলিপি, কিন্তু আদি পুস্তকের একটি ক্ষুদ্র অংশই কেবল তাতে পাওয়া যায়। সাধারণভাবে মেসোরিটিক পাঠটাই উত্তমভাবে সংরক্ষিত ও নির্ভরযোগ্য,তবে এতে অনেকগুলো পৃথক পৃথক ঘটনা রয়েছে, যেগুলো অন্যান্য সংস্করণে অধিকতর ভাল পাঠে সংরক্ষিত আছে।.[14]
উৎস
অধিকাংশ পণ্ডিত একমত হন যে, মূলত বিশ শতকে পঞ্চপুস্তকের পাঁচটা বই-আদি পুস্তক, যাত্রা পুস্তক, লেবীয় পুস্তক, গণনা পুস্তক ও দ্বিতীয় পুস্তক-চারটা সূত্র থেকে এসেছে। সেগুলো হলো জাওহিস্ট (বা ইয়াহ্য়িস্ট), এলোহিস্ট, দ্বিতীয় বিবরণপন্থী (ডেটেরনমিস্ট) এবং রাব্বানিক (যাজকীয়) উৎস, যাদের প্রতিটি একই মৌলিক ইতিহাসের কথা বলে এবং বিভিন্ন সম্পাদনকারীদের দ্বারা একত্রে যুক্ত করা হয়েছে।[15] ১৯৭০সাল থেকে পণ্ডিতজগতে এক বিপ্লব ঘটে চলেছেঃ বর্তমানে এলোহিস্ট উৎসকে বৃহৎ পরিসরে কেবল জাওহিস্ট উৎসেরই একটা প্রকরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়,যখন যাজকীয় উৎসকে ক্রমাগতভাবে দলিল হিসেবে না দেখে জাওহিস্ট উপাদানগুলোর পরিমার্জিত ও সম্প্রসারিত রূপ হিসেবে দেখা হয়।(আদি পুস্তকে দ্বিতীয় বিবরণপন্থী উৎসের অস্তিত্ব নেই)।[16]
পৃথক পৃথক উৎসগুলোকে শনাক্ত করতে পুনরাবৃত্তির ও সাদৃশ্যপূর্ণ গল্পের উদাহরণগুলোকে ব্যবহার করা হয়। আদি পুস্তকে এগুলোর অন্তর্গত হলো- তিনটি ভিন্ন ঘটনায়ঃ একটি নবীর এই দাবি যে, তার স্ত্রী ছিল তার বোন, দুটি সৃষ্টি কাহিনী এবং ইব্রাহিম কর্তৃক হাজেরা ও ইসমাইলকে মরুভূমিতে পাঠানো সংক্রান্ত দুইটা বর্ণনা।[17]
এটি লেখনীগুলোর রচনাকাল নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়। বিশ শতকের প্রথমার্ধের পণ্ডিতগণ এই সিদ্ধান্তে আসেন যে,জাওহিস্ট উৎসের/রচনার উদ্ভব হয় রাজতান্ত্রিক যুগে, বিশেষভাবে সুলাইমানের রাজসভায়, খ্রিস্টপূর্ব ১০ম শতকে এবং যাজকীয় রচনার উদ্ভব হয় খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতকের মধ্যভাগে (এমনকি রচয়িতা পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছেঃ এযরা (ইসলামেঃ উযায়ের)), কিন্তু অতি সাম্প্রতিক অভিমত এই যে, জাওহিস্ট উৎস রচিত হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকের ব্যাবিলনীয় নির্বাসনের আগে অথবা নির্বাসনকালীন সময়ে, এবং যাজকীয় চূড়ান্ত সংস্করণ রচিত হয় নির্বাসন যুগের শেষের দিকে বা সামান্য পরে।[7]
পুস্তকটি কেন রচিত হয়েছিল সে সম্বন্ধে, একটি তত্ত্ব, যা অর্জন করেছে যথেষ্ট কৌতূহল, যদিও তা এখনো বিতর্কিত, আর তা হলো "পারসিক রাজকীয় আজ্ঞা"। এই তত্ত্ব প্রস্তাব করে যে,হাখমানেশী সাম্রাজ্যের পারসিকরা, ৫৩৯ খ্রিস্টপূর্ব তাদের ব্যাবিলন বিজয়ের পর জেরুসালেমকে ব্যাপকভাবে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রদানে সম্মত হয়, কিন্তু তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে গোটা সম্প্রদায়ের সম্মতিতে, একটি একক বিধিবদ্ধ আইন রচনা করতে আদেশ করেছিল।সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণে দুটি ক্ষমতাশালী শ্রেণী- যাজকীয় পরিবারগুলো,যারা মন্দিরের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং মূসা ও মরুভূমিতে নিরুদ্দেশ ভ্রমণের (মিশর থেকে বের হয়ে প্রায় ৩৮ বছর ইসরাইলীয়দের উদ্দেশ্যহীন ভ্রমণ) সাথে নিজেদের উৎসকে চিহ্নিত করত,অপরদিকে অধিকাংশ ভূমির মালিক পরিবারগুলো, যারা ছিল "প্রবীণ (বিলাপ গাথা ৫ঃ১২)" এবং নিজেদের উৎসকে চিহ্নিত করত ইব্রাহিমের সাথে, যে তাদের এই ভূমি প্রদান করেছিলেন- এদের মধ্যে অনেক বিষয়ে দ্বন্দ্ব ছিল এবং প্রত্যেকেরই নিজস্ব "উৎপত্তির ইতিহাস" ছিল, কিন্তু সবাইকে ব্যাপকভাবে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের পারসিক প্রতিশ্রুতি, একটি একক আইন রচনার কাজে পারস্পরিক সহযোগিতার একটি শক্তিশালী উদ্দীপনা প্রদান করল।[18]
ধরন
আদি পুস্তককে দেখা হয় ,সম্ভবত "সৃষ্টি পুরাকথা"-র শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে। এটি সাহিত্যের একটি ধরন যেখানে মানুষের প্রথম আবির্ভাবের কথা,পূর্বপুরুষ ও বীরদের কাহিনী, সংস্কৃতি ও নগরীসমূহের কথা বলা হয়েছে।[19] সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য উদাহরণগুলো পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকের গ্রীক ঐতিহাসিকদের কাজেঃ তাদের অভীষ্ট ছিল, সমসাময়িক প্রসিদ্ধ গোত্রগুলোকে প্রাচীন এবং শৌর্যপূর্ণ অতীতের সাথে সম্পর্কযুক্ত করা, এবং এরূপ করতে গিয়ে তারা পৌরাণিক কাহিনী, কিংবদন্তি ও প্রকৃত ঘটনার মধ্যে কোনো পার্থক্য রাখেনি।[20] পন্টিফিকাল বিবলিকাল ইন্সটিটিউটের প্রফেসর জিন-লুইস স্কা প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসবিদদের মূল সূত্রকে "নিত্যতা সূত্র" হিসেবে অভিহিত করেনঃ সকল পুরাতনই মূল্যবান,কোনোকিছুই অবিবেচ্য নয়।[21] এছাড়াও স্কা এরূপ প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসের পিছনের তাৎপর্যের দিকে ইঙ্গিত করে বলেনঃ জাতিসমূহের (ইহুদিদের প্রাচীন পারসিক ফিলিস্তিনের প্রতিবেশী) ব্যাপারে ইসরাইলীয় ঐতিহ্যগুলোর মূল্য প্রমাণ করতেই প্রাচীনত্বের প্রয়োজন রয়েছে। তদ্রূপ, ইসরাইলের নিজেরই মধ্যকার বিভিন্ন সংঘাতগুলোর মাঝে সামঞ্জস্য বিধান এবং তাদেরকে মিলিত করতেও প্রাচীনত্বের প্রয়োজন।[21]
বিষয়বস্তু
পূর্বপুরুষদের প্রতি প্রতিশ্রুতি
১৯৭৮ সালে ডেভিড ক্লাইন্স প্রকাশ করলেন তার প্রভাবশালী "দ্য থিম অব দ্যা পেনটাটিউক"। এটি প্রভাবশালী এই কারণে যে তিনি ছিলেন প্রথম পঞ্চপুস্তকের মূলভাব নিয়ে প্রশ্নকারীদের অন্যতম। ক্লাইন্সের সিদ্ধান্ত এই ছিল যে, সামগ্রিকভাবে মূলভাবটি হল "নবীদের প্রতি প্রতিশ্রুতি বা আশীর্বাদের আংশিক পূর্ণতা- যার অর্থ দাঁড়ায় আংশিক অপূর্ণতাও"।(এখানে,পূর্ণতাকে "আংশিক" বলে অভিহিত করার মাধ্যমে ক্লাইন্স সেই ঘটনার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করেন,যখন দ্বিতীয় বিবরণের শেষেও লোকেরা কেনানের বাইরেই ছিল)। [22]
নবীগণ, বা পূর্ববর্তীগণ হলেন ইব্রাহিম, ইসহাক ও ইয়াকুব এবং তাদের স্ত্রীগণ (স্বাভাবিকভাবে ইউসুফকে বাদ দেয়া হয়েছে)।[23] যেহেতু ইয়োডেহ্-ওয়াহে (YHWH; একে ট্যাট্রাগ্রাম্যাটন ও বলা হয়) নামটি তাদের কাছে প্রকাশিত হয় নি, তাই তারা এল(El)-এর ইবাদত করতেন তার নানা অভিব্যক্তিতে। [24] (যাহোক,এটা উল্লেখযোগ্য যে, জাওহিস্ট উৎসে নবীগণ ঈশ্বরকে ইয়োডেহ্-ওয়াহে (YHWH) নামে উল্লেখ করেন, উদাহরণ স্বরূপ আদি পুস্তক ১৫)। নবীদের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর ইসরাইলীয়দের মনোনয়নের ঘোষণা দেন, যার অর্থ দাঁড়ায়, তিনি বাছাই করেছেন ইসরাইলীয়দের তার বিশেষ সম্প্রদায় হিসেবে এবং তাদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে নিজেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করেন।[25] ঈশ্বর নবীদেরকে বলেন যে, তিনি তাদের বংশধরদের প্রতি আন্তরিক থাকবেন, এবং ইসরাইলীয়দের থেকে প্রত্যাশিত যে, তারা ঈশ্বর ও তার প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস রাখবে। (আদি পুস্তক ও হিব্রু বাইবেলের প্রেক্ষিতে "বিশ্বাস" বলতে বোঝায় প্রতিশ্রুতিপূর্ণ সম্পর্কের সাথে ঐকমত্য, কেবল বিশ্বাসের একটি অংশ নয়)। [26]
এই প্রতিশ্রুতির নিজস্ব তিনটি অংশ আছেঃ বংশধর, আশীর্বাদ ও ভূমি।[27] প্রত্যেক নবীর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতির পরিপূরণ নির্ভর করে একজন পুরুষ উত্তরাধিকারী থাকার উপর, এবং কাহিনী ক্রমাগত জটিল হয় এই ঘটনার দ্বারা যে, সারাহ,রেবেকাহ এবং রাখেল-প্রত্যেক প্রত্যাশিত মা-ই বন্ধা। যাই হোক, পূর্ববর্তীগণ ঈশ্বরের প্রতি তাদের বিশ্বাস বজায় রাখেন এবং প্রত্যেকক্ষেত্রে ঈশ্বর একটি করে পুত্র সন্তান দান করেন - ইয়াকুবের ক্ষেত্রে, ১২ জন পুত্র, মনোনীত ইসরাইলীয়দের ভিত্তি। তিনটি প্রতিশ্রুতির সবগুলোই পরবর্তী প্রজন্মে অধিকতর সম্পূর্ণরূপে পালিত হয়েছে, যতক্ষণ না ইউসুফের মধ্য দিয়ে সমগ্র পৃথিবী দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা পায়,[28] এবং ইসরাইলের (ইয়াকুব) সন্তানদের মিশরে নিয়ে আসার মাধ্যমে সে (ইউসুফ) প্রতিশ্রুতি পূরণের ওছিলা (নিমিত্ত) হয়।[23]
ঈশ্বরের বাছাইকৃত সম্প্রদায়
পণ্ডিতগণ সাধারণত একমত যে, স্বর্গীয় প্রতিশ্রুতির মূলভাব পিতৃতান্ত্রিক (নবুওয়াতি) চক্রগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে, কিন্তু এই একটিমাত্র মূলভাবের উপর গুরুত্বারোপের দ্বারা আদি পুস্তকের ধর্মতত্ত্বকে বিচারের চেষ্টা কতটা ফলপ্রসূ, তা নিয়ে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেন। উদ্ধৃতির পরিবর্তে এটা অনেক বেশি ফলদায়ক হবে, যদি ইব্রাহিমের জীবনকাল, ইয়াকুবের জীবনকাল,ইউসুফের জীবনকাল এবং জাওহিস্ট ও যাজকীয় উৎসগুলোকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যায়।[29] সমস্যা তখনই দেখা দেয় যখন আদিপুস্তকের ১-১১ (প্রারম্ভিক ইতিহাস) অধ্যায়ের আখ্যানে বর্ণিত, স্বর্গীয় প্রতিশ্রুতির পিতৃতান্ত্রিক (নবী-তান্ত্রিক) ধারণার সাথে মানুষের মন্দ প্রকৃতির মুখে ঈশ্বরের ক্ষমা সম্পর্কিত ধারণাকে মিলিত করার একটি উপায় খোঁজা হয়।[30][31] একটা সমাধান এটা হতে পারে যে, পিতৃতান্ত্রিক আখ্যানগুলোকে ঈশ্বরের মানবজাতি থেকে উদাসীন না থাকার সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ বিবেচনা করা। ঈশ্বর জগত ও মানবজাতি সৃষ্টি করেন, মানবজাতি বিদ্রোহ করে এবং ঈশ্বর ইব্রাহিমকে মনোনীত করেন।[32]
এই মূল ভিত্তির (যা জাওহিস্টদের থেকে এসেছে) সাথে যাজকীয় উৎস অঙ্গীকারনামাগুলোকে স্তরে স্তরে বিভক্তকারী ইতিহাসকে যোগ করেছে ,যার পতিটিরই রয়েছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যপূর্ণ চিহ্ন। প্রথম অঙ্গীকারনামা ঈশ্বর ও সমগ্র জীবের মধ্যে,এবং এর প্রতীক হিসেবে রঙধনু দ্বারা একে চিহ্নিত করা হয়েছে; দ্বিতীয় অঙ্গীকারনামা ইব্রাহিমের বংশধরদের (ইসমাইলীয় এবং অন্যান্যদের সাথে ইসরাইলীয়) সাথে, এবং এর প্রতীক ছিল খৎনা (লিঙ্গাগ্রচর্মচ্ছেদন); এবং সর্বশেষ, যা যাত্রাপুস্তকের পূর্বে প্রকাশ পায় নি,তা ছিল কেবল ইসরাইলীয়দের সাথে,এবং এর প্রতীক ছিল সাব্বাথ (একটি বিশেষ দিন)। প্রতিটি অঙ্গীকারনামার মধ্যস্থতাকারী ছিলেন একজন মহান নেতা (নূহ,ইব্রাহিম,মূসা), এবং প্রত্যেক স্তরে ঈশ্বর ক্রমাগত নিজেকে প্রকাশ করেছেন নিজের নামের দ্বারা(নূহের সাথে এলোহিম, ইব্রাহিমের সাথে এল শাদ্দাই, মূসার সাথে ইয়াহওয়েহ (য়োডেহ-ওয়াহে শব্দটিকে স্বরবর্ণ সহযোগে "ইয়াহোভা" (יְהֹוָה, [jăhowɔh] (শুনুন)) হিসেবে উচ্চারণ করা হয়েছে))।[32]
ইহুদি ধর্মে তোরাহ-র সাপ্তাহিক পঠিত অংশসমূহ
- বেরেশিত (অর্থঃ সূচনায়), আদি পুস্তকের ১-৬: সৃষ্টিকর্ম, এডেন বাগান, আদম ও ইভ, কাইন ও আবেল, লামেখ, পাপ
- নোয়াখ (অর্থঃ নূহ), আদি পুস্তকের ৬-১১: নূহের নৌকা, প্লাবন, নূহের মদ্যাসক্তি, বাবেল মিনার
- লেখ-লেখা (অর্থঃ চলে যাও, তুমি নিজে), আদি পুস্তকের ১২-১৭: ইব্রাহিম, সারাহ, লূত, সন্ধি, হাজেরা ও ইসমাঈল, পরিচ্ছেদন(খৎনা)
- ভাইয়েরিয়া (অর্থঃ এবং তিনি দেখা দিলেন), আদি পুস্তকের ১৮-২২: ইব্রাহিমের অতিথিবৃন্দ, সদোমবাসী, লূতের অতিথিবৃন্দ ও পলায়ন, হাজেরার নির্বাসন, ইসহাকের বাঁধন
- হায়্যি সারাহ (অর্থঃ সারাহ-র জীবন), আদি পুস্তকের ২৩-২৫: সারাহ-র দাফন, ইসহাকের জন্য রেবেকাহ
- টোলেডট (অর্থঃ বংশতালিকা), আদি পুস্তকের ২৫-২৮: এসৌ ও ইয়াকুব, এসৌর জন্ম-অধিকার, ইসহাকের আশীর্বাদ
- ভায়েতজেই (অর্থঃ এবং সে বেরিয়ে গেল), আদি পুস্তকের ২৮-৩২: ইয়াকুবের পলায়ন, রাখেল, লীয়া, লাবান, ইয়াকুবের সন্তানগণ ও প্রস্থান
- ভায়িশ্লাখ (অর্থঃ এবং সে পাঠাল), আদি পুস্তকের ৩২-৩৬: এসৌর সাথে ইয়াকুবের পুনর্মিলন, দীনার বলাৎকার
- ভায়েশেভ (অর্থঃ এবং সে বসতি স্থাপন করল), আদি পুস্তকের ৩৭-৪০: ইউসুফের স্বপ্ন, জোব্বা, এবং দাসত্ব, যুদা ও তামার, ইউসুফ ও পোটিফার
- মিকেৎজ (অর্থঃ পরে), আদি পুস্তকের ৪১-৪৪: ফারাওয়ের স্বপ্ন, প্রশাসনে ইউসুফ, ইউসুফের ভাইদের মিশর সফর"
- ভায়িগাশ (অর্থঃ এবং সে কাছাকাছি আসল), আদি পুস্তকের ৪৪-৪৭: ইউসুফের আত্মপ্রকাশ, ইয়াকুবের মিশরে গমন"
- ভাইহি (অর্থঃ এবং সে বেঁচে ছিল), আদি পুস্তকের ৪৭-৫০: ইয়াকুবের আশীর্বাদসমূহ, ইয়াকুব ও ইউসুফের মৃত্যু"
প্রথম উক্তি
সম্ভবত হিব্রু বাইবেলের সর্বাধিক পরিচিত অংশ, আদি পুস্তকের প্রথম উক্তি, যা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়ঃ "আদিতে,যখন পরমেশ্বর আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকাজ শুরু করলেন..." কিন্তু এই ধারণা যে,ঈশ্বর শূন্য থেকে জগত সৃষ্টি করেছেন, তা সরাসরি হিব্রু বাইবেলের কোথাও বলা হয়নি।[33]
আরও দেখুন
- বাইবেলের সময়কাল নির্ধারণ
- "এনুমা এলিশ"
- আদি সৃষ্টি আখ্যান
- বাইবেলের ঐতিহাসিকতা
- মূসা-কৃত রচনা
- প্যারাডাইস লস্ট
- প্রোটেভ্যাঞ্জেলিয়াম
- আদি পুস্তকে স্ত্রী-বোন আখ্যান
তথ্যসূত্র
- Hamilton (১৯৯০), পৃঃ 1
- Bergant ২০১৩, পৃ. xii।
- Bandstra ২০০৮, পৃ. 35।
- Bandstra ২০০৮, পৃ. 78।
- "Bandstra28-29"
- Van Seters (১৯৯৮), p. 5
- Davies (১৯৯৮), p. 37
- Hamilton (1990), p. 2
- Whybray (১৯৯৭), p. 41
- McKeown (২০০৮), p. 2
- Walsh (২০০১), p. 112
- Bergant ২০১৩, পৃ. 45।
- Bergant 2013, পৃ. 103।
- Hendel, R. S. (১৯৯২). Genesis, Book of. In D. N. Freedman (Ed.), The Anchor Yale Bible Dictionary (ভলিউম 2, p. 933). New York: Doubleday
- Gooder (২০০০), pp. 12–14
- Van Seters (২০০৪), pp. 30–86
- Lawrence Boadt; Richard J. Clifford; Daniel J. Harrington (২০১২)। Reading the Old Testament: An Introduction। Paulist Press।
- Ska (২০০৬), pp. 169, 217–18
- Van Seters (২০০৪) pp. 113–14
- Whybray (২০০১), p. 39
- Ska (২০০৬), p. 169
- Clines (১৯৯৭), p. 30
- Hamilton (১৯৯০), p. 50
- John J Collins (২০০৭), A Short Introduction to the Hebrew Bible, Fortress Press, পৃষ্ঠা 47
- Brueggemann (২০০২), p. 61
- Brueggemann (২০০২), p. 78
- McKeown (২০০৮), p. 4
- Wenham (২০০৩), p. 34
- Hamilton (১৯৯০), pp. 38–39
- Hendel, R. S. (১৯৯২). Genesis, Book of. In D. N. Freedman (Ed.), The Anchor Yale Bible Dictionary (ভলিউম ২, p. 935). New York: Doubleday
- Kugler, Hartin (২০০৯), p.9
- Bandstra (২০০৪), pp. 28–29
- Nebe, Gottfried (২০০২), Creation in Paul's Theology. In Hoffman, Yair; Reventlow, Henning Graf. "Creation in Jewish and Christian tradition", A&C Black, p. 119
গ্রন্থপঞ্জি
আদি পুস্তক সম্পর্কিত টীকাসমূহ
- Bandstra, Barry L. (২০০৮)। Reading the Old Testament। Cengage Learning। আইএসবিএন 0495391050।
- Bergant, Dianne (২০১৩)। Genesis: In the Beginning। Liturgical Press। আইএসবিএন 9780814682753।
- Blenkinsopp, Joseph (২০১১)। Creation, Un-creation, Re-creation: A Discursive Commentary on Genesis 1–11। Continuum International Publishing Group। আইএসবিএন 9780567372871।
- Brueggemann, Walter (১৯৮৬)। Genesis। Interpretation: A Bible Commentary for Teaching and Preaching। Atlanta: John Knox Press। আইএসবিএন 0-8042-3101-X।
- Carr, David M. (২০০০)। "Genesis, Book of"। Freedman, David Noel; Myers, Allen C.। Eerdmans Dictionary of the Bible। Amsterdam University Press। আইএসবিএন 9780567372871।
- Cotter, David W (২০০৩)। Genesis। Liturgical Press। আইএসবিএন 9780814650400।
- De La Torre, Miguel (২০১১)। Genesis। Belief: A Theological Commentary on the Bible। Westminster John Knox Press।
- Fretheim, Terence E. “The Book of Genesis.” In The New Interpreter's Bible. Edited by Leander E. Keck, vol. 1, pp. 319–674. Nashville: Abingdon Press, 1994. আইএসবিএন ০-৬৮৭-২৭৮১৪-৭.
- Hamilton, Victor P (১৯৯০)। The Book of Genesis: chapters 1–17। Eerdmans। আইএসবিএন 9780802825216।
- Hamilton, Victor P (১৯৯৫)। The Book of Genesis: chapters 18–50। Eerdmans। আইএসবিএন 9780802823090।
- Hirsch, Samson Raphael. The Pentateuch: Genesis. Translated by Isaac Levy. Judaica Press, 2nd edition 1999. আইএসবিএন ০-৯১০৮১৮-১২-৬. Originally published as Der Pentateuch uebersetzt und erklaert Frankfurt, 1867–1878.
- Kass, Leon R. The Beginning of Wisdom: Reading Genesis. New York: Free Press, 2003. আইএসবিএন ০-৭৪৩২-৪২৯৯-৮.
- Kessler, Martin; Deurloo, Karel Adriaan (২০০৪)। A Commentary on Genesis: The Book of Beginnings। Paulist Press। আইএসবিএন 9780809142057।
- McKeown, James (২০০৮)। Genesis। Eerdmans। আইএসবিএন 9780802827050।
- Plaut, Gunther. The Torah: A Modern Commentary (1981), আইএসবিএন ০-৮০৭৪-০০৫৫-৬
- Rogerson, John William (১৯৯১)। Genesis 1–11। T&T Clark। আইএসবিএন 9780567083388।
- Sacks, Robert D (১৯৯০)। A Commentary on the Book of Genesis। Edwin Mellen।
- Sarna, Nahum M. The JPS Torah Commentary: Genesis: The Traditional Hebrew Text with the New JPS Translation. Philadelphia: Jewish Publication Society, 1989. আইএসবিএন ০-৮২৭৬-০৩২৬-৬.
- Speiser, E.A. Genesis: Introduction, Translation, and Notes. New York: Anchor Bible, 1964. আইএসবিএন ০-৩৮৫-০০৮৫৪-৬.
- Towner, Wayne Sibley (২০০১)। Genesis। Westminster John Knox Press। আইএসবিএন 9780664252564।
- Turner, Laurence (২০০৯)। Genesis, Second Edition। Sheffield Phoenix Press। আইএসবিএন 9781906055653।
- Von Rad, Gerhard (১৯৭২)। Genesis: A Commentary। Westminster John Knox Press। আইএসবিএন 9780664227456।
- Wenham, Gordon (২০০৩)। "Genesis"। James D. G. Dunn, John William Rogerson। Eerdmans Bible Commentary। Eerdmans। আইএসবিএন 9780802837110।
- Whybray, R.N (২০০১)। "Genesis"। John Barton। Oxford Bible Commentary। Oxford University Press। আইএসবিএন 9780198755005।
সাধারণ
- Bandstra, Barry L (২০০৪)। Reading the Old Testament: An Introduction to the Hebrew Bible। Wadsworth। আইএসবিএন 9780495391050।
- Blenkinsopp, Joseph (২০০৪)। Treasures old and new: Essays in the Theology of the Pentateuch। Eerdmans। আইএসবিএন 9780802826794।
- Brueggemann, Walter (২০০২)। Reverberations of faith: A Theological Handbook of Old Testament themes। Westminster John Knox। আইএসবিএন 9780664222314।
- Campbell, Antony F; O'Brien, Mark A (১৯৯৩)। Sources of the Pentateuch: Texts, Introductions, Annotations। Fortress Press। আইএসবিএন 9781451413670।
- Carr, David M (১৯৯৬)। Reading the Fractures of Genesis। Westminster John Knox Press। আইএসবিএন 9780664220716।
- Clines, David A (১৯৯৭)। The Theme of the Pentateuch। Sheffield Academic Press। আইএসবিএন 9780567431967।
- Davies, G.I (১৯৯৮)। "Introduction to the Pentateuch"। John Barton। Oxford Bible Commentary। Oxford University Press। আইএসবিএন 9780198755005।
- Gooder, Paula (২০০০)। The Pentateuch: A Story of Beginnings। T&T Clark। আইএসবিএন 9780567084187।
- Hendel, Ronald (২০১২)। The Book of "Genesis": A Biography (Lives of Great Religious Books)। Princeton University Press। আইএসবিএন 9780691140124।
- Kugler, Robert; Hartin, Patrick (২০০৯)। The Old Testament between Theology and History: A Critical Survey। Eerdmans। আইএসবিএন 9780802846365।
- Levin, Christoph L (২০০৫)। The Old Testament: A Brief Introduction। Princeton University Press। আইএসবিএন 9780691113944।
- Longman, Tremper (২০০৫)। How to read Genesis। InterVarsity Press। আইএসবিএন 9780830875603।
- McEntire, Mark (২০০৮)। Struggling with God: An Introduction to the Pentateuch। Mercer University Press। আইএসবিএন 9780881461015।
- Newman, Murray L. (১৯৯৯)। Genesis (পিডিএফ)। Forward Movement Publications, Cincinnati, OH। ২০ মে ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৮।
- Ska, Jean-Louis (২০০৬)। Introduction to Reading the Pentateuch। Eisenbrauns। আইএসবিএন 9781575061221।
- Van Seters, John (১৯৯২)। Prologue to History: The Yahwist as Historian in Genesis। Westminster John Knox Press।
- Van Seters, John (১৯৯৮)। "The Pentateuch"। Steven L. McKenzie, Matt Patrick Graham। The Hebrew Bible Today: An Introduction to Critical Issues। Westminster John Knox Press। আইএসবিএন 9780664256524।
- Van Seters, John (২০০৪)। The Pentateuch: A Social-science Commentary। Continuum International Publishing Group। আইএসবিএন 9780567080882।
- Walsh, Jerome T (২০০১)। Style and Structure in Biblical Hebrew Narrative। Liturgical Press। আইএসবিএন 9780814658970।
আদি পুস্তক | ||
পূর্বসূরী None |
হিব্রু বাইবেল | উত্তরসূরী যাত্রাপুস্তক |
খ্রিস্টান পুরাতন নিয়ম |