আতুম
প্রাচীন মিশরীয় পৌরাণিক কাহিনীতে সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা ছিলেন আতুম। তিনি সর্বপ্রথম ইতিহাসের প্রতিনিধিত্ব করেন; তাঁর পূর্বে আর কিছুই ছিল না। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, তিনি নু এর বিশৃঙ্খল জল থেকে উঠে এসে শু (বায়ু) এবং টেফান্ট (আর্দ্রতা) তৈরি করতে নিজের মহিলাসুলভ দিকটি ব্যবহার করেছিলেন। কিছুক্ষণের জন্য, তার দুই সন্তান সমুদ্রের কাছে হারিয়ে গিয়েছিল। আতুম তার অপসারণযোগ্য চোখ "উদযাত চক্ষু" প্রেরণ করলেন তাদের সন্ধানে। তারা ফিরে এলে আতুম আনন্দে অশ্রু ফেলে কেঁদেছিলো। এই অশ্রু মাটিতে যেখানে পড়েছিল সেখানেই পুরুষরা তৈরি হয়েছিল। তারপর জল এবং বাতাস এই দুটি উপাদানের মধ্য দিয়ে অন্যান্য দেবদেবীর জন্ম হয়েছিল। মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো যে তিনি সমস্ত দেবতাদের পিতা। আতুম প্রথমে পৃথিবীর অংশীদার এবং তারপরে অস্ত যাওয়ার সূর্যের অংশীদার ছিলো।

ভূমিকা
পৌরাণিক হেলিওপলিটন সৃষ্টিতত্ত্বের কাহিনী মতে আতুম নিজেই নিজেকে তৈরি করেছিলেন।[1] প্রাথমিক কল্পকাহিনী বলে যে আতুম দেবতা শু এবং দেবী তেফনুতকে তাঁর মুখ থেকে ফেলা থুতুর মাধ্যমে সৃষ্টি করেছিলেন।[2] আতুম হস্তমৈথুনের মাধ্যমে এই কাজটি করেছিলেন, যে হাতটি তিনি এতে ব্যবহার করেছিলেন সেটি তার মধ্যে থাকা অন্তর্নিহিত মহিলা বৈশিষ্ট্যের প্রতিনিধিত্ব করে।[3] আবার অন্যান্য ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে নিজের ছায়ার সাথে মিলিত হয়ে তিনি সৃষ্টি হয়েছেন।[4]
মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো যে ওল্ড কিংডমে আতুম মৃত রাজার আত্মাকে পিরামিড থেকে তারকাপূর্ণ আকাশে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো।[2] পাশাপাশি তিনি সূর্য দেবতাও ছিলেন, তিনি প্রাথমিক সূর্য দেবতা রা-এর সাথে যুক্ত ছিলেন। আতুম সন্ধ্যার সূর্যের সাথে বিশেষভাবে যুক্ত ছিলেন অন্যদিকে রা ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত ছিলো প্রভাত এবং মধ্যাহ্নের সূর্যের দেবতা খেপরির সাথে।[5]
গ্রীকো-রোমান আমল থেকে এখনও অবধি চলমান বই "বুক অফ দি ডেড" বা মৃতের বইয়ে সূর্যদেব আতুম একটি সাপের রূপে বিশৃঙ্খলা-জল থেকে আবির্ভূত হয়েছিলেন বলে উল্লেখ রয়েছে, প্রাণীটি প্রতিদিন সকালে নিজেকে নবায়ন করে।[6][7][8]
তথ্যসূত্র
- The British Museum। "Picture List" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১২।
- "The Egyptian Gods: Atum"। ২০০২-০৮-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৩০, ২০০৬।
- Wilkinson, Complete Gods and Goddesses, pp. 18, 99.
- "The Egyptian Creation Myth — How the World Was Born"। Experience Ancient Egypt। ২০১০-০১-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- Wilkinson, Richard H. (2003). The Complete Gods and Goddesses of Ancient Egypt. Thames & Hudson. pp. 205
- Toorn, Karel van der; Becking, Bob; Horst, Pieter Willem van der (১৯৯৯)। Dictionary of Deities and Demons in the Bible (ইংরেজি ভাষায়)। Wm. B. Eerdmans Publishing। পৃষ্ঠা 121। আইএসবিএন 9780802824912।
- Ellis, Normandi (১৯৯৫-০১-০১)। Dreams of Isis: A Woman's Spiritual Sojourn (ইংরেজি ভাষায়)। Quest Books। পৃষ্ঠা 128। আইএসবিএন 9780835607124।
- Bernal, Martin (১৯৮৭)। Black Athena: The linguistic evidence (ইংরেজি ভাষায়)। Rutgers University Press। পৃষ্ঠা 468। আইএসবিএন 9780813536552।