আড়িয়াল খাঁ নদ

আড়িয়াল খাঁ পদ্মার একটি প্রধান শাখা নদ। আড়িয়াল খাঁ হচ্ছে ফরিদপুর, মাদারীপুরবরিশাল জেলার একটি নদ। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৫৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩০০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক আড়িয়াল খাঁ নদের প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ২।[1]

আড়িয়াল খাঁ
আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে মাছ ধরার দৃশ্য
আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে মাছ ধরার দৃশ্য
আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে মাছ ধরার দৃশ্য
দেশ বাংলাদেশ
অঞ্চল বরিশাল বিভাগ,
জেলাসমূহ ফরিদপুর জেলা, মাদারীপুর জেলা, বরিশাল জেলা
উৎস পদ্মা নদী
মোহনা তেঁতুলিয়া নদী
দৈর্ঘ্য ১৫৫ কিলোমিটার (৯৬ মাইল)

ইতিহাস

অতীতে নদটির নাম ছিল ভুবনেশ্বর। ১৮০১ সালে ঠগি দমনের জন্য আড়িয়াল খাঁ নামক একজন জমাদার গভর্ণমেন্ট কর্তৃক নিযুক্ত হয়। ভুবনেশ্বর নদ থেকে একটি খাল খনন করিয়ে তা প্রাচীন পদ্মার দক্ষিণাংশের সঙ্গে সংযুক্ত করিয়ে দেওয়া হয়। এই খালটিই কালক্রমে প্রবল রুপ ধারণ করে প্রাচীন পদ্মা ও ভুবনেশ্বরের কতকাংশ গ্রাস করে এবং সাধারণ জনগণের কাছে আড়িয়াল খাঁ নামে পরিচিত হয়।[2][3]

নদের গতিপ্রকৃতি

বর্তমানে সমুদ্রগামী পদ্মার শাখাগুলোর মধ্যে মধুমতী ও আড়িয়াল খাঁ নদ দুটি প্রধান। পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ ঘাট থেকে প্রায় ৫১.৫ কিমি দক্ষিণ-পূর্বের পদ্মা থেকে এই শাখা নদ (আড়িয়াল খাঁ) প্রবাহিত হয়ে ফরিদপুরমাদারীপুর জেলার মধ্য দিয়ে বরিশালের গৌরনদী উপজেলামুলাদী উপজেলার উত্তর-পূর্বভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তেঁতুলিয়া চ্যানেলে ঢুকেছে। আড়িয়াল খাঁ নদ চলার পথে নড়িয়ার খাল, পালং খাল, ভুবনেশ্বর, ময়নাকাটা, কুমার, কাইলা, নয়াভাঙনী, জয়ন্তী প্রভৃতি নদ-নদীর মাধ্যমে পদ্মা নদীর সাথে সংযোগ রক্ষা করে চলেছে। নদের গতিপথ প্রায়ই আঁকাবাঁকা। নদটি ভাঙনপ্রবণ। এর ফলে অনেক জনপদ এর গর্ভে বিলীন হয়েছে। মাদারীপুর শহরও এই নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। এই নদীর তীরবর্তী উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো হলো পিঁয়াজখালী, চৌধুরীহাট, উৎরাইল, দত্তপাড়া, কবিরাজপুর, লতিখোলা, সফিপুর, নোমরহাট, মাদারীপুর পৌরসভা, খাসেরহাট বন্দর। উনিশ শতকের শেষ দিকে আড়িয়াল খাঁ ছিল প্রধান ধারা। বর্তমানে এর শেষ প্রান্ত পলি ভরাট হয়ে মাদারীপুরের কাছে আড়িয়াল খাঁ দুটি শখায় বিভক্ত হয়েছে। বাঁ দিকের প্রবাহিত অংশ আড়িয়াল খাঁ। আর ডান দিকে টরকি নামে প্রবাহিত হচ্ছে।[2]

অন্যান্য তথ্য

আড়িয়াল খাঁ নদটি সারা বছর নাব্য। মার্চ-এপ্রিলে পানির প্রবাহ কম থকে। তবে বর্ষাকালে পানি প্রবাহ বেশি থাকে। তখন জুলাই-আগস্ট মাসে প্রবাহের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ঘনমিটার/সেকেন্ড। এ সময় নদে পানির গভীরতা ১২ মিটার পর্যন্ত থাকে। নদটির মোট দৈর্ঘ্য ১৬৩ কিমি। মাদারীপুর পর্যন্ত স্বাভাবিক জোয়ার-ভাটার পরিসর ০.৩২ মিটার। প্রস্থ ৩০০ মিটার। নদটির অববাহিকার আয়তন ১৪৩৮ বর্গ কিমি।[2]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ১৭-১৮। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
  2. বাংলাদেশের নদীঃ মোকাররম হোসেন; পৃষ্ঠা ১৩৮ ও ১৩৯; কথাপ্রকাশ; দ্বিতীয় সংস্করণঃ আগস্ট ২০১৪
  3. "আড়িয়াল খাঁ নদ"অনুশীলন। সংগ্রহের তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.