আইজল জেলা
আইজল জেলা হল ভারতের মিজোরাম রাজ্যের আট জেলার মধ্যে অন্যতম । জেলার উত্তরে কোলাসিব জেলা, পশ্চিমে মামিত জেলা, দক্ষিণে সেরছিপ জেলা, দক্ষিণ পশ্চিমে লুংলেই জেলা এবং পূর্ব দিকে চম্ফাই জেলা দ্বারা সীমাবদ্ধ। জেলার মোট আয়তম ৩,৫৭৭ বর্গকিলোমিটার (১,৩৮১ মা২)। জেলার সদর দপ্তর আইজল শহর, যা মিজোরামের রাজধানী। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, এটি মিজোরামের সবচেয়ে জনবহুল জেলা।[1]
আইজল জেলা | |
---|---|
মিজোরামের জেলা | |
মিজোরামে আইজলের অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | মিজোরাম |
সদরদপ্তর | আইজল শহর |
আয়তন | |
• মোট | ৩,৫৭৬ বর্গকিমি (১,৩৮১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৪,০৪,০৫৪ |
• জনঘনত্ব | ১১০/বর্গকিমি (২৯০/বর্গমাইল) |
জনতাত্ত্বিক | |
• লিঙ্গানুপাত | ১০০৯ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
ইতিহাস
১৮৭১-৭২ সালে, মিজো জাতিগোষ্ঠীর প্রধান খালকোমের অবাধ্য আচরণের কারণে ব্রিটিশ সরকার একটি চৌকি প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য করে, যা পরে আইজল গ্রামে পরিণত হয়। [2]. 1890 সালে মিজো উপজাতিদের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সামরিক অভিযানের সময় কর্নেল স্কিনেরের সৈন্যদের সমর্থন করার জন্য আসাম পুলিশ অফিসার ড্যালি এবং তার ৪০০ জন সৈনিক আইজলে পৌঁছন। ড্যালির সুপারিশে, আইজল একটি দৃঢ় পোস্টের স্থান হিসাবে নির্বাচিত হয় যা কর্নেল স্কিনারকে নির্মাণের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। সৈন্যরা স্টক ও বিল্ডিংগুলিকে এই স্থানে নিয়ে যায়[3]। ১৮৯২-৯৫ সালে মেজর ল্যাচের তত্ত্বাবধানে রাস্তা তৈরি হলে শিলচরের সাথে আইজলের সরাসরি সংযোগ স্থাপিত হয়। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত, আইজল একটি বড় গ্রাম ছিল কিন্তু মিজো-বিদ্রোহের পর মিজো গ্রামের পুনর্নির্মাণের ফলে এটি একটি বড় শহর হয়ে ওঠে। আইজল উত্তর ও দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে মিজোরামের সড়কপথের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। মিজোরামের জনসংখ্যার ২৫% আইজলে বসবাস করে।
নামকরণের ইতিহাস
এই জেলার নামকরণ করা হয়, তার সদর দপ্তর আইজল শহরের নামে।. মিজো ভাষাতে, 'আই' বলতে 'আইডু' বোঝায় যা একটি হলুদের প্রজাতি এবং 'জল' মানে মানে ক্ষেত্র। সম্ভবত এই অঞ্চলে আইদু হলুদের ব্যাপক প্রাপ্তির কারণে এইরকম নামকরণ করা হয়েছে।
ভৌগোলিক অবস্থান
লোকসভা কেন্দ্র
আইজল জেলা মিজোরাম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
বিধানসভা কেন্দ্র
জেলাটিতে মোট ১৪টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে: তুইভাল, চালফিথ, তাওয়ি, আইজল উত্তর-১, আইজল উত্তর-২, আইজল উত্তর-৩, আইজল পূর্ব-১, আইজল পূর্ব-২,আইজল পশ্চিম-১,আইজল পশ্চিম-২,আইজল পশ্চিম-৩, আইজল দক্ষিণ-১, আইজল দক্ষিণ-২ এবং আইজল দক্ষিণ-৩।
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী আইজল জেলায় জনসংখ্যা ৪০৪,০৫৪ জন [1] যা কিনা প্রায় ব্রুনেই-এর জনসংখ্যার সমান। জনসংখ্যার অনুযায়ী ভারতের ৬৪০ টি জেলার মধ্যে আইজলের অবস্থান ৫৫৭ [1] তম স্থানে। জেলার জনঘনত্ব ১১৩ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২৯০ জন/বর্গমাইল)[1]। ২০০১-১১ এর দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২৪.০৭%[1]। আইজলের লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ জন পুরুষের জন্য ১০০৯ জন নারী এবং স্বাক্ষরতার হার ৯৮.৫% [1]।
ভাষা
- পৈতে ভাষা
- র্যালতে ভাষা
- বিয়াতে ভাষা
- Bawm ভাষা
- হাকা চিন ভাষা
- হমার ভাষা
- Pangkhu ভাষা
- ফালাম চিন ভাষা
- তেড়িম চিন ভাষা
- থাডো ভাষা
- সিমতে ভাষা
- হ্রাংখোল ভাষা
- মিজো ভাষা
জনসংখ্যার প্রধান অংশ মিজো ভাষায় কথা বলে, যা রাজ্যের সরকারী ভাষা হিসাবে মান্যতা পেয়েছে, যা লুসেই বা দুলিহান ভাষা নামেও পরিচিত।
ভূপ্রকৃতি
আইজল মিজোরামের উত্তর অংশে কর্কটক্রান্তি রেখার উত্তর দিকে অবস্থিত। এটি পশ্চিমে টালাউং নদী উপত্যকায় এবং পূর্ব দিকে তিরীয়াল নদী উপত্যকায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১৩২ মিটার (৩১৭৫ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত।
জলবায়ু
আইজলের আবহাওয়া সারা বছর মনোরম থাকে। গ্রীষ্মকালে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
Aizawl | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জলবায়ু লেখচিত্র | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
অর্থনীতি
আইজলের অর্থনীতি মূলত সরকারী চাকরি দ্বারা বজায় থাকে কারণ এটি মিজোরামের রাজধানী এবং সমস্ত প্রশাসনিক দপ্তরগুলির অবস্থান এখানে।এছাড়াও প্রধান ব্যাংকগুলি আইজলে অবস্থিত।
পর্যটক আকর্ষণ
- ডুরটল্যাং পাহাড় - এই পাহাড়ের ওপর থেকে আইজল শহরের ৩৬০ ডিগ্রী দৃশ্য দেখা সম্ভব।
- সলোমন'স টেম্পল - একটি নবনির্মিত চার্চ।
- মিজোরাম স্টেট মিউসিয়াম - শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই যাদুঘরটি মিজোরামের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য প্রদর্শন করে।
- রেইক হেরিটেজ গ্রাম - শুধুমাত্র একটি পর্যটক রিসর্ট নয়, রেইক তার চিরসবুজ বনভূমি এবং বিবিধ বন্যপ্রাণী, প্রধানত পাহাড়ী পাখির জন্যে বিখ্যাত।
- স্যালভেশন আরমি টেম্পল - এই জায়গাটিতে বিস্ময়কর কিছু চাইম রয়েছে, যাদের ঘণ্টাধ্বনি সারা শহরে শোনা যায় শান্ত সকালবেলাগুলিতে।
পরিবহন
সড়ক পরিবহণ
আইজল জাতীয় সড়ক ৫৪ দ্বারা শিলচর-এর সাথে, জাতীয় সড়ক ৪০ দ্বারা আগরতলার সাথে এবং জাতীয় সড়ক ১৫০-এর মাধ্যমে ইম্ফল-এর সাথে সংযুক্ত। এছাড়া মিজোরাম স্টেট রোড ট্রান্সপোর্টেশন (এমএসটি)-এর বাস আইজল শহর থেকে অন্যান্য জেলা এবং আইজলের গ্রামগুলিতে চলাচল করে।আইজল শহরে হলুদ ও সাদা ট্যাক্সিগুলি ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়; মারুতি গাড়িগুলি ব্যবহৃত হয় ট্যাক্সি হিসেবে। বেসরকারি মালিকানাধীন নীল এবং সাদা মিনি বাস নিয়মিত সেবা প্রদান করে শহরে।
রেলপথ
আইজল জেলাতে কোন রেল যোগাযোগ নেই। সব থেকে কাছের রেল জংশন হল ২৫৪ কিলোমিটার দূরে আসামের লামডিং জংশন।
তথ্যসূত্র
- "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১।
- https://books.google.com/books?id=0PcdaYllHNUC&pg=PA75&lpg=PA75&dq=lunglei+economy#v=onepage&q=lunglei%20economy&f=falseEconomic Growth of Mizoram: Role of Business & Industry
- https://web.archive.org/web/20131112023258/http://aizawl.nic.in/makingofaijal.htm