অ্যান রিভিয়ার

অ্যান রিভিয়ার (২৫ জুন ১৯০৩ - ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯০) ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী ও স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ডের সক্রিয় বোর্ড সদস্য। তিনি ব্রডওয়ে মঞ্চে ও একাধিক সমাদৃত চলচ্চিত্রে মায়ের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য সর্বাধিক পরিচিত। হাউজ আন-আমেরিকান অ্যাক্টিভিটিজ কমিটির তীব্র সমালোচক রিভিয়ারের নাম ১৯৫০ সালে বেতারে রেড চ্যানেলস: দ্য রিপোর্ট অন কমিউনিস্ট ইনফ্লুয়েন্স ও টেলিভিশনে আসে এবং ফলশ্রুতিতে তিনি হলিউডে কালোতালিকাভুক্ত হন।

অ্যান রিভিয়ার
Anne Revere
১৯৪০-এর দশকে স্টুডিওর প্রচারণামূলক ছবিতে রিভিয়ার
জন্ম(১৯০৩-০৬-২৫)২৫ জুন ১৯০৩
মৃত্যু১৮ ডিসেম্বর ১৯৯০(1990-12-18) (বয়স ৮৭)
লোকাস্ট ভ্যালি, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সমাধিমাউন্ট অবার্ন সেমাট্রি
শিক্ষাওয়েলেসলি কলেজ
আমেরিকান ল্যাবরেটরি থিয়েটার
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯৩১-১৯৭৭
দাম্পত্য সঙ্গীস্যামুয়েল রোজেন (বি. ১৯৩৫; মৃ. ১৯৮৪)

রিভিয়ার ন্যাশনাল ভেলভেট (১৯৪৫) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন এবং দ্য সং অব বের্নাদেত (১৯৪৩) ও জেন্টলম্যান্‌স অ্যাগ্রিমেন্ট (১৯৪৭) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য আরও দুইবার একই বিভাগে মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি ১৯৬০ সালে লিলিয়ান হেলম্যানের টয়েজ ইন দি অ্যাটিক নাটকে অভিনয়ের জন্য মঞ্চনাটকে শ্রেষ্ঠ চরিত্রাভিনেত্রী বিভাগে একটি টনি পুরস্কার অর্জন করেন।

প্রারম্ভিক জীবন

রিভিয়ার ১৯০৩ সালের ২৫শে জুন নিউ ইয়র্ক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ক্লিনটন একজন স্টকব্রোকার ছিলেন।[1] তিনি মার্কিন বিপ্লবী নায়ক পল রিভিয়ারের সরাসরি উত্তরসূরি।[2] রিভিয়ারের শৈশব কাটে আপার ওয়েস্ট সাইড ও নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের ওয়েস্টফিল্ডে। ১৯২৬ সালে তিনি ওয়েলেসলি কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। উচ্চ বিদ্যালয়ে ও কলেজের শুরুতে নাট্য দলে যোগ দেওয়ার অসফল প্রচেষ্টার পর তিনি অবশেষে ওয়েলেসলি কলেজে যোগ দিতে সফল হন এবং সেখানে নাট্যকলা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন।[3] তিনি আমেরিকান ল্যাবরেটরি স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখানে তার সহপাঠি ছিলেন মারিয়া অস্পেন্‌স্কায়ারিচার্ড বলেস্লাভ্‌স্কি[1]

কর্মজীবন

রিভিয়ার আঞ্চলিক ও স্টক থিয়েটারে কাজ করে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।[4] চলচ্চিত্রে চরিত্রাভিনেত্রী হিসেবে কাজ করতে থাকেন এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত তিন ডজন চলচ্চিত্রে কাজ করেন। তকে প্রায়ই এলিজাবেথ টেইলর, জেনিফার জোন্স, গ্রেগরি পেক, জন গারফিল্ডমন্টগামারি ক্লিফটের মায়ের চরিত্রে দেখা যেত।[1] তিনি ১৯৪৩ সালে দ্য সং অব বের্নাদেত চলচ্চিত্রে নাম চরিত্রের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, কিন্তু ফর হুম দ্য বেল টোলস চলচ্চিত্রে অভিনয় করা কাটিনা পাক্সিনুর কাছে হেরে যান।[5] ১৯৪৫ সালে তিনি ন্যাশনাল ভেলভেট (১৯৪৫) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।[6] এছাড়া তিনি জেন্টলম্যান্‌স অ্যাগ্রিমেন্ট (১৯৪৭) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পুনরায় একই বিভাগে মনোনয়ন লাভ করেন।[7] তিনি ১৯৬০ সালে লিলিয়ান হেলম্যানের টয়েজ ইন দি অ্যাটিক নাটকে অভিনয়ের জন্য মঞ্চনাটকে শ্রেষ্ঠ চরিত্রাভিনেত্রী বিভাগে টনি পুরস্কার অর্জন করেন।

১৯৫১ সালে রিভিয়ার স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ডের বোর্ড থেকে অব্যহতি নেন। সে সময়ে তিনি মার্কিন কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনের পক্ষে ওকালতি করেন এবং হাউজ আন-আমেরিকান অ্যাক্টিভিটিজ কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।[8] আ প্লেস ইন দ্য সান ছিল দুই দশকের মধ্যে তার অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র।[1] তিনি টেল মি দ্যাট ইউ লাভ মি, জুনি মুন দিয়ে পর্দায় ফিরে আসেন।

ব্যক্তিগত জীবন

রিভিয়ার ১৯৩৫ সালের ১১ই এপ্রিল মঞ্চ পরিচালক স্যামুয়েল রোজেনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রোজেন ১৯৮৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[4] রিভিয়ার ডেমোক্র্যাটিক দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৫২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতিত্বের নির্বাচনে অ্যাডলাই স্টিভেনসনের নির্বাচনী কার্যক্রমে সমর্থন দিয়েছিলেন।[9]

অসুস্থতা ও মৃত্যু

রিভিয়ার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৯৯০ সালের ১৮ই ডিসেম্বর ৮৭ বছর বয়সে নিউ ইয়র্কের লোকাস্ট ভ্যালির তার বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।[10] মৃত্যুকালে তার এক বোন জীবিত ছিল।[8] তাকে ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজের মাউন্ট অবার্ন সেমাট্রিতে সমাহিত করা হয়।[11]

তথ্যসূত্র

  1. ফ্লিন্ট, পিটার বি. (ডিসেম্বর ১৯, ১৯৯০)। "Anne Revere, 87, Actress, Dies; Was Movie Mother of Many Stars"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০২০
  2. প্যাট্রিক, রবার্টসন (১৯৮৬)। The Guinness Book of Almost Everything You Didn't Need to Know About the Movies। গিনেজ সুপারলেটিভ লিমিটেড। পৃষ্ঠা ৩৪। আইএসবিএন 0-85112-481-X।
  3. কুনস, রবিন (এপ্রিল ১৩, ১৯৪৪)। "Anne Revere Already Has A Job"বিগ স্প্রিংস ডেইলি হেরাল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। বিগ স্প্রিং, টেক্সাস। পৃষ্ঠা । সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০২০ নিউজপেপার্স.কম-এর মাধ্যমে। উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারযুক্ত প্রকাশনা - বিনামূল্যে পড়া যাবে
  4. নিসেন, অ্যাক্সেল (২০০৭)। Actresses of a Certain Character: Forty Familiar Hollywood Faces from the Thirties to the Fifties (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যাকফারল্যান্ড। পৃষ্ঠা ১৬৩–১৬৭। আইএসবিএন 9780786427468। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
  5. "The 16th Academy Awards (1944) Nominees and Winners" (ইংরেজি ভাষায়)। অস্কার। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০২০
  6. "The 18th Academy Awards (1946) Nominees and Winners" (ইংরেজি ভাষায়)। অস্কার। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০২০
  7. "The 20th Academy Awards (1948) Nominees and Winners" (ইংরেজি ভাষায়)। অস্কার। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০২০
  8. "Anne Revere, 87; won Oscar, blacklisted in '50s"। শিকাগো ট্রিবিউন। ডিসেম্বর ২০, ১৯৯০। পৃষ্ঠা ৮-Section 2। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
  9. Motion Picture and Television Magazine, November 1952, page 33, Ideal Publishers
  10. অবিচুয়ারি, ভ্যারাইটি, ২৪ ডিসেম্বর ১৯৯০।
  11. উইলসন, স্কট (আগস্ট ১৭, ২০১৬)। Resting Places: The Burial Sites of More Than 14,000 Famous Persons (৩য় সংস্করণ)। ম্যাকফারল্যান্ড। আইএসবিএন 9780786479924 গুগল বুকস-এর মাধ্যমে।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.