অসম সাহিত্য সভা

অসম সাহিত্য সভা ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে অসমীয়া ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ আর প্রসারের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়।[1]। বর্তমানে অসম ও অসমের বাইরে এই সংগঠনের হাজারেরও অধিক শাখা আছে। সংগঠনটির প্রধান কার্যালয় যোরহাট শহরের চন্দ্ৰকান্ত সন্দিকৈ ভবনে অবস্থিত।

অসম সাহিত্য সভা
অসম সাহিত্য সভার প্রতীক চিহ্ন
নীতিবাক্যচির চেনেহী মোর ভাষা জননী
গঠিত১৯১৭
উদ্দেশ্যঅসমীয়া ভাষা, সাহিত্যসংস্কৃতির সৰ্বাঙ্গীন উন্নতি
সদরদপ্তরচন্দ্ৰকান্ত সন্দিকৈ ভবন, যোরহাট, অসম
দাপ্তরিক ভাষা
অসমীয়া
সভাপতি
পৰমানন্দ ৰাজবংশী
ওয়েবসাইটasamsahityasabha.com
প্রাক্তন নাম
অসমীয়া ভাষা উন্নতি সাধিনী সভা

ইতিহাস

উনিশ শতকের শেষের দিকে কলকাতা শহরে পাঠরত কয়েকজন অসমীয়া ছাত্র অসমীয়া সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ আগস্ট "অসমীয়া ভাষা উন্নতি সাধিনী সভা" প্রতিষ্ঠা করেন[2]। এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিসমূহ ছিলেন লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া, হেমচন্দ্ৰ গোস্বামী, বেণুধর রাজখোয়া, ডালিমচন্দ্ৰ বরা, তীৰ্থনাথ শৰ্মা, কমলচন্দ্ৰ শৰ্মা ইত্যাদি। ১৯১৭ খিষ্টাব্দে এই উদ্যোগের ফলশ্রুতি হিসেবে অসম সাহিত্য সভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে ডিসেম্বর মাসে শিবসাগর জেলায় অসম সাহিত্য সভার প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং এর সভাপতিত্ব করেন পদ্মনাথ গোহাঞিবরুয়াশরৎচন্দ্ৰ গোস্বামী অসম সাহিত্য সভার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন।[3][4]

উদ্দেশ্য

অসমীয়া ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সর্বাঙ্গীণ উন্নতির লক্ষ্য নিয়ে তৈরী অসম সাহিত্য সভার সংবিধানে এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্যগুলি হলোঃ

  1. অভিধান, ব্যাকরণ এবং অন্যান্য গ্রন্থের সংকলন এবং প্রকাশ করা;
  2. প্রাচীন সাহিত্য এবং লোক-সাহিত্যর অনুসন্ধান, সংগ্রহ, গবেষণা এবং প্রকাশ করা;
  3. অসমীয়া সাহিত্যে যে যে বিষয়ের পুথির অভাব, তা অভাব দুর করা;
  4. গ্রন্থকারকদের পুরস্কার এবং সামর্থহীন সাহিত্যিকদের সাহায্য প্রদান করা;
  5. সঙ্গীত, চিত্রবিদ্যা এবং ভাস্কর্য্য বিদ্যার উন্নতিসূচক কাজ করা;
  6. সভার মুখপাত্র এবং প্রচারপত্র প্রকাশ করা;
  7. ভাষা এবং সাহিত্যর প্রচার-পত্রাদি প্রকাশ করা;
  8. ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা;
  9. সাহিত্য এবং সংস্কৃতি সম্পর্কীয় বিনিময় কার্যকরী করা;
  10. অসমীয়া ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির উন্নয়ন এবং বিকাশর ক্ষেত্র থেকে অন্তরায় দূর করা;
  11. অসমীয়া ভাষা-সাহিত্যর উন্নতির অর্থে কাজ করা।

সভাপতিদের তালিকা

সভাপতিগণের তালিকা[5]
  • পদ্মনাথ গোহাঞিবরুয়া, ১৯১৭
  • চন্দ্ৰধর বরুয়া, ১৯১৮
  • কালিরাম মেধি, ১৯১৯
  • হেমচন্দ্ৰ গোস্বামী, ১৯২০
  • অমৃতভূষণ দেব অধিকারী, ১৯২৩
  • কনকলাল বরুয়া, ১৯২৪
  • লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া, ১৯২৪
  • রজনীকান্ত বরদলৈ ,১৯২৫
  • বেণুধর রাজখোয়া, ১৯২৬
  • তরুণরাম ফুকন, ১৯২৭
  • কমলাকান্ত ভট্টাচাৰ্য্য, ১৯২৯
  • মফিজুদ্দিন আহমেদ হাজারিকা, ১৯৩০
  • নগেন্দ্ৰ নারায়ণ চৌধুরী, ১৯৩১
  • জ্ঞানদাভিরাম বরুয়া, ১৯৩৩
  • আনন্দ চন্দ্ৰ আগরয়ালা, ১৯৩৪
  • রঘুনাথ চৌধারী, ১৯৩৬
  • কৃষ্ণকান্ত সন্দিকৈ, ১৯৩৭
  • ময়িদুল ইসলাম বরা, ১৯৪০
  • নীলমণি ফুকন, ১৯৪৪
  • নীলমণি ফুকন, ১৯৪৭
  • অম্বিকাগিরি রায়চৌধুরী, ১৯৫০
  • সূৰ্য্যকুমার ভূঞা,১৯৫৩
  • নলিনীবালা দেবী, ১৯৫৪
  • যতীন্দ্ৰনাথ দুবরা, ১৯৫৫
  • বেণুধর শৰ্মা, ১৯৫৬
  • পদ্মধর চলিহা, ১৯৫৮
  • অতুল চন্দ্ৰ হাজৰিকা, ১৯৫৯
  • ত্ৰৈলোক্যনাথ গোস্বামী ,১৯৬০
  • ত্ৰৈলোক্যনাথ গোস্বামী, ১৯৬১
  • রত্নকান্ত বরকাকতী, ১৯৬৩
  • মিত্ৰদেব মহন্ত, ১৯৬৪
  • ডিম্বেশ্বর নেওগ, ১৯৬৫
  • বিনন্দ চন্দ্ৰ বরুয়া, ১৯৬৬
  • নকুলচন্দ্ৰ ভূঞা, ১৯৬৭
  • জ্ঞাননাথ বরা, ১৯৬৮
  • আনন্দ চন্দ্ৰ বরুয়া, ১৯৬৯
  • উপেন্দ্ৰচন্দ্ৰ লেখারু, ১৯৭০
  • তীৰ্থনাথ শৰ্মা, ১৯৭১
  • হেম বরুয়া, ১৯৭২
  • গিরিধর শৰ্মা, ১৯৭৩
  • মহেশ্বর নেওগ, ১৯৭৪
  • সত্যেন্দ্ৰনাথ শৰ্মা, ১৯৭৫
  • যজ্ঞেশ্বর শৰ্মা, ১৯৭৬
  • সৈয়দ আব্দুল মালিক, ১৯৭৭
  • প্ৰসন্নলাল চৌধুরী, ১৯৭৮
  • অতুল চন্দ্ৰ বরুয়া, ১৯৭৯
  • যতীন্দ্ৰনাথ গোস্বামী, ১৯৮০
  • সীতানাথ ব্ৰহ্মচৌধুরী, ১৯৮১
  • সীতানাথ ব্ৰহ্মচৌধুরী, ১৯৮২
  • বীরেন্দ্ৰ কুমার ভট্টাচাৰ্য, ১৯৮৩
  • যোগেশ দাস, ১৯৮৫
  • বীরেন বরকটকী, ১৯৮৬
  • মহেন্দ্ৰ বরা, ১৯৮৭
  • কীৰ্তিনাথ হাজারিকা, ১৯৮৮
  • মহিম বরা, ১৯৮৯
  • নবকান্ত বরুয়া, ১৯৯০
  • নিৰ্মলপ্ৰভা বরদলৈ, ১৯৯১
  • লক্ষ্যধর চৌধুৰী, ১৯৯২
  • ভূপেন হাজারিকা, ১৯৯৩
  • লীলা গগৈ, ১৯৯৪
  • হিতেশ ডেকা, ১৯৯৫
  • লক্ষ্মীনন্দন বরা, ১৯৯৬
  • নগেন শইকীয়া, ১৯৯৭
  • নগেন শইকীয়া, ১৯৯৮
  • চন্দ্ৰপ্ৰসাদ শইওকীয়া, ১৯৯৯
  • চন্দ্ৰপ্ৰসাদ শইওকীয়া, ২০০০
  • হোমেন বরগোহাঞি, ২০০১
  • হোমেন বরগোহাঞি, ২০০২
  • বীরেন্দ্ৰনাথ দত্ত, ২০০৩
  • বীরেন্দ্ৰনাথ দত্ত, ২০০৪
  • কনকসেন ডেকা, ২০০৫
  • কনকসেন ডেকা, ২০০৬
  • কনকসেন ডেকা, ২০০৭
  • রংবং তেরাং, ২০০৯
  • রংবং তেরাং, ২০১০
  • ইমরান শাহ, ২০১৩

পত্রিকা

১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে অসম সাহিত্য সভা অসম সাহিত্য সভা পত্রিকা নামে অসমীয়া ভাষা সাহিত্যর গবেষণাধর্মী, বিশ্লেষণাত্মক প্রবন্ধের ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশ করে আসছে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় পত্রিকাটির প্রকাশ বন্ধ হলেও ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে নিয়মিতভাবে প্রকাশ হয়ে আসছে।

প্রতীক

অসম সাহিত্য সভার বর্তমান প্রতীকটি ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ অক্টোবরে গ্রহণ করা হয়। এই প্রতীক যুগল দাস নামক এক শিল্পী অঙ্কন করেছিলেন[6]

সাহিত্য সভার আনুষ্ঠানিক সঙ্গীত

এই গীতের স্বরলিপি যোরহাটর শ্ৰীইন্দ্ৰেশ্বর শৰ্মার ও গীতিকার মিত্ৰদেব মহন্ত অধিকার।


চির চেনেহী মোর ভাষা জননী ।
ধন্যে পুণ্যে হৃত পাবনী, আই ॥
প্ৰকৃতি পরশ রসে অমল কমল
চঞ্চল হৃদি জলে ঢালে পরিমল
কোমল চম্পার কলি
ঢৌবে ঢৌবে ঢৌবে তুলি
রিণিকি রিণিকি কোনে তোলে রাগিণী ॥
সংসার গুরুভারে অবশ পরাণ
হিয়াত বিলীন হয় হিয়াভরা গান
কার নিচুকনি শুনা
শুনি বানী ব্যথা পমা
চকুতে চকুর নীরে লয় জিরণি ॥
জীবনে মরণে রণে লহরী সুধার
রসনা শিতানে বহি সিঁচা শতধার
হে’ মোর মধুরননা
মাগিছোঁ মাধুৰী কণা
দিয়া দিয়া দিয়া আই মধু ভাষিণী ॥

তথ্যসূত্র

  1. "Recept"। Sahityasabha.8k.com। ২০১২-০২-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-১২
  2. Times of Assam। "Asom Sahitya Sabha – A contemporary Analysis"। Timesofassam.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-১২
  3. Encyclopaedia of Indian Literature: devraj to jyoti, Volume 2, আহরণ: ১৯-১১-২০১২
  4. "Asom Sahitya Sabha: The topmost Literary Organization of Assam - Assam"। Assamspider.com। ২০১০-০৮-০২। ২০১৩-০৫-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-২৮
  5. ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের পর অসম সাহিত্য সভার সভাপতিদের তালিকা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে অসম সাহিত্য সভার ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত: ১৮ নভেম্বর, ২০১২
  6. কৌশিক। "অসম সাহিত্য সভা"দৈনিক অসম
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.