অষ্টক গীত ও নৃত্য
অষ্টক গান বা অষ্টক নাচ পশ্চিমবঙ্গের ও বাংলাদেশের প্রাচীন লোকজ সংস্কৃতির একটি অন্যতম প্রধান ধারা। এটি সাধারণতঃ 'বাঙালি হিন্দু' সমাজে চৈত্র সংক্রান্তির নানাবিধ আচার-অনুষ্ঠানের সময় পরিবেশিত হয়ে থাক।
সাধারণভাবে, চৈত্র মাসের শেষ-তিন দিন “গাজন উৎসব”-এর আনুষঙ্গিক “নীলের/শিবের গাজন” উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষতঃ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সংগঠিত লোকজ মেলায় বিভিন্ন ধরনের গান ও আচার-অনুষ্ঠানাদিতে অন্যতম প্রধান আনুষঙ্গিক পরিবেশনা হিসেবে আয়োজন করা হয় অষ্টক গীত ও নৃত্য।[1]
সাধারণ ধারণা
বাংলায় ষড়ঋতুর পরিক্রমায় বসন্তের শেষ ভাগে ও গ্রিস্মের পূর্ব-ভাগে অনুষ্ঠিত হয় গ্রামীণ জনপদের অন্যতম প্রধান লোকজ-উৎসব “চৈত্র-সংক্রান্তী”। এসময়ই মূলতঃ বাংলার লোকজ উৎসবের অন্যতম প্রধান ধারা “গাজন”-এর শাখা “নীলের / শিবের গাজন” অনুষ্ঠিত হয় এবং এই উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষতঃ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জমে উঠে এক-ধরনের লোকজ মেলার যা চৈত্রের শেষ-তিন দিন বিভিন্ন ধরনের গান ও আচার-অনুষ্ঠানাদি পালনের মাধ্যমে সমাপ্ত করা হয়। আর এ-সময় এ অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষ তাদের চলমান ঐতিহ্য অনুসারে পরিবেশন করে থাকে অষ্টক গীত / নৃত্যের।
বাংলাদেশের ও পশ্চিমবঙ্গের পূর্বাংশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম একটি প্রধান উপাদান হলো এই অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনা; যা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান অবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তার প্রেয়সী শ্রীরাধিকা দেবীর প্রণয়-লীলার পটভূমিতে রচিত। এটি এ-অঞ্চলের অধিবাসীদের অন্যতম প্রধান লোকজ উৎসব “চৈত্র-সংক্রান্তী”-এর সাথেই মূলতঃ সম্পর্কিত তবে এটি শিবের স্থলে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম-লীলা বিষয়ক আখ্যান ও লোকপুরাণ অবলম্বনে পরিবেশিত হয়ে থাকে। এর পরিবেশনাতে গ্রামের ছোট ছোট ছেলে-ছোকরারা শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীরাধিকা দেবী ও রাধার শখী গোপীদের সাজ সেজে দুই দলে বিভক্ত হয়ে গান ও নাচ সহযোগে সাধারণতঃ রাধা-কৃষ্ণের “নৌকা-বিলাস” পালা অভিনয় করে থাকে।
“চৈত্র-সংক্রান্তী” উৎসবের কয়েকদিন পূর্ব হতে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির সামনে একদল শিল্পী গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান আয়োজনের লক্ষ্যে অর্থ সংগ্রহ করে; যেখানেও আমরা অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের গীত / নৃত্যের পরিবেশনার মধ্যে কখনো কখনো অষ্টক গীত / নৃত্য-এর পরিবেশনা দেখতে পাই। আর এক্ষেত্রে বিষয়-বস্তু হিসেবে থাকে শিব, রাধা-কৃষ্ণ, নিমাই সন্ন্যাসী, গৌরী, বক্ষ্রা, বিষ্ণু, চন্ডিদাস-রজকিনী, বেহুলা-লখিন্দর এই অষ্ট-প্রসঙ্গ।
উৎপত্তি ও নামকরণ
ঠিক কি কারণে বা কোথা থেকে “অষ্টক” নামক গীত / নৃত্যের উদ্ভব ঘটেছে সে সম্পর্কে সঠিকভাবে কোনো তথ্য-বৃত্তান্ত জানা যায় না; বরং এই বিষয়ে নান-ধরনের মতামত প্রচলিত রয়েছে। কেউ বলেন, “এতে আটটি বৈষ্ণবীয় প্রসঙ্গ থাকায়”; কেউ বলেন, “প্রতি দলে আট জনে মিলে রাধা-কৃষ্ণের উক্তি-প্রত্যুক্তিমূলক নাট্যধর্মী গীত পরিবেশন করায়”; কারো মতে, “এটি শ্রীকৃষ্ণের অষ্টপ্রহরের লীলা-সংক্রান্ত নাট্যগীতি হওয়ায়”- একে “অষ্টক গীত / নৃত্য” বলা হয়। আবার এ সম্পর্কে কোন কোন গবেষকের মতে, “এ-সব গানে সনাতন ধর্মীদের অষ্ট-অবতার রাধা, কৃষ্ণ, সুবল, বিশাখা, ললিতা, বৃন্দা, বড়িমাই ও বলরাম-এর বিভিন্ন কার্য-চরিত্রের সমন্বয় ঘটেছে বলে এটি অষ্টক গীত / নৃত্য বলে পরিচিত”; বিপরীতে অপর একদল বলেন, “অবতার শ্রীকৃষ্ণ তার অষ্ট বা আটজন শখীকে নিয়ে লীলা করতেন এবং এ-গানে সেই উপাখ্যান আলোচিত হয় বলে একে অষ্টক গীত / নৃত্য বলে”। অন্য-দিকে, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এই গীত / নৃত্যে “বাসলী দেবী”-এর বন্দনাও রয়েছে, যা মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম নিদর্শন বড়ু চন্ডীদাস রচিত “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” কাব্যের ভণিতায়ও লক্ষণীয়; তাই বলা যায় উৎস যা-ই হোক না কেন, লোক-সংস্কৃতির এই ধারাটি সুদূর প্রাচীন কাল হতে এদেশের লোক-মানসের সাথে প্রচলিত প্রথার একটি অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে।
বিভিন্ন অঞ্চলে একে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করা হয়; যেমনঃ ওপার বাংলার মুর্শিদাবাদ ও মালদহ অঞ্চলে “অষ্টকগান” নামে, এপার বাংলার বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলে ‘‘অষ্টগান’’ নামে, ফরিদপুর / বরিশাল অঞ্চলে “অষ্টক গীত / নৃত্য” নামে এটি পরিচিত।
অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনার সময়-কাল
সাধারণত এই গীত / নৃত্য নীলের / শিবের গাজন উপলক্ষে প্রচলিত “চৈত্র-সংক্রান্তি”-এর সময় পরিবেশিত হয়। এতে মধ্যাহ্ন সূর্যকে গীত / নৃত্যের মাধ্যমে বন্দনা করতে হয় বলে এটি সাধারণত দিনের বেলায় পরিবেশন করা হয়; তবে আমাদের দেশের কিছু কিছু অঞ্চল, যেমনঃ নড়াইল ও খুলনায় এটি রাতের বেলায়ও যাত্রা-পালার ন্যায় পরিবেশিত হয়। “চৈত্র-সংক্রান্তি”-এর সময় অনুষ্ঠিত চড়ক পূজার একটি অন্যতম অঙ্গ হলো অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনা; যদিও চড়ক পূজা শিবের তুষ্টি ও পূণ্যার্থে অনুষ্ঠিত হয়, তবুও এর অঙ্গ হিসেবে কি কারণে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম-লীলার বর্ণনামূলক অষ্টক গীত / নৃত্যের অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে তার উৎস সম্পর্কে আমরা কিছু জানতে পারিনা।
এছাড়াও “জন্মাষ্টমী”-তে এবং “অষ্ট-প্রহর ব্যাপী” অনুষ্ঠিত “নাম-সংকীর্তন” অনুষ্ঠানে-ও অষ্টক গীত / নৃত্য পরিবেশিত হয়ে থাকে।
পরিবেশনা খুটি-নাটি
পরিবেশনার ধরন
অষ্টক গীত / নৃত্য পরিবেশনার দুটি ধরন রয়েছে; এক. পাট নাচানির সময় পালা গানের সহায়ক হিসেবে; যেখানে গ্রামের ছোট ছেলে-মেয়েরা রাধা-কৃষ্ণ এবং শখি সেজে প্রেমের গান গায় এবং দুই. “চৈত্র-সংক্রান্তি”-এর দিন রাত্রে যাত্রা-পালার মাধ্যমে; যেখানে অভিনয়ের মাধ্যমে সংলাপ ও গানে কৃষ্ণ ও রাধার প্রেম-লীলার আখ্যান পরিবেশিত হয়।
গানের ভাব ও ভাষা
অষ্টক গীত / নৃত্যে গানের ভাষা আটপৌরে ও অতি সাধারণ হলেও এর আবেগ ও ভাবের প্রকাশ খুব হৃদয়গ্রাহী ও মনোমুগ্ধকর। এই গান সাধারণতঃ খেয়ালের ঢঙে গাওয়া হয় এবং গানে স্থায়ী ও অন্তরা নামক দুটি স্তবক থাকে; যাতে অন্তরাগুলি ভগ্ন ত্রিপদীর আঙ্গিকে রচিত। শিব ও অন্যান্য অবতারদের সম্পর্কে গাওয়া গানগুলোতে হালকা রসের মাধ্যমে শিব-পার্বতীর দাম্পত্য জীবনের দ্বন্দ্ব্ব্ব ও ভালাবাসার প্রকাশ এবং সংশ্লিষ্ট অবতারের মহিমা ও যাপিত জীবনালেখ্য দেখানে হয়; আর কৃষ্ণ-রাধার সম্পর্কিত গানগুলোতে অণুরাগ-অভিমানের প্রাধ্যন্য থাকে। উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশের গ্রামেগুলোর পার্শ্বেই রয়েছে নদী আর তার নিকটে বা পারাপারে দেখা যায় খোলা মাঠ যেখানে দৈনন্দিন বাজার বা হাট বসে, আর এসব বাজার বা হাটে কিংবা পাশ্ববর্তী গ্রামে নদী পারাপারের মাধ্যমেই যেতে হয়ে; অষ্টক গীত / নৃত্যে নদী পারাপারের এই চিরন্তন দৃশ্যই কৃষ্ণ-রাধা প্রণয়-আখ্যানের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় যা “রাধা-কৃষ্ণের নৌকা বিলাস পালা” নামে পরিচিত।
পরিবেশক দল
১০ থেকে ১২ জন শিল্পী নিয়ে অষ্টক গীত / নৃত্য দল গঠিত হয়; আর তারা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে থাকে। এতে একজন প্রধান গায়েন (যিনি সূত্রধর বা “সরকার” নামে পরিচিত), একজন করে কৃষ্ণবেশি বালক ও রাধাবেশি বালক (ক্ষেত্র বিশেষে বালিকা) থাকে; এ ছাড়াও একজন পরিচালক / পরিবেশক এবং আরও তিন বা ততোধিক পরিবেশনকারী থাকেন। সূত্রধর বা “সরকার” গানের শুরু ও গতি-প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করেন এবং তার নির্দেশ অনুসারেই অন্যান্য কুশীলবরা রীতিনীতি ও প্রয়োজনীয় তাল-লয় ও ধাপ-সমূহ রক্ষা করে পরিবেশনা সচল রাখে; আর এতে কখনো জোরালো ও চটুল - আবার কখনো ধীর লয়ে গাইতে থাকা গানের মধ্যে মধ্যে চলতে থাকে নৃত্যের প্রদর্শন।
ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র
অষ্টক গীত / নৃত্য পরিবেশনের অণুষাঙ্গিকরূপে বাঁশি, ঢোল, হারমোনিয়াম, মন্দিরা ও খোল বা মৃদঙ্গ, করতাল, ঘুঙুর ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহৃত হয়। এই সব বাদ্যযন্ত্রীদেরকে বিভিন্ন নামে সম্বোধন করা হয়, যেমনঃ খুলি, হারমোনিয়াম মাস্টার ইত্যাদি।
পরিবেশনার পদ্ধিত
অষ্টক গীত / নৃত্যের সূচনার পূর্বে উঠান বা মঞ্চের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বাদ্যযন্ত্রীরা প্রথমে জনপ্রিয় কোনো-একটি দেশাত্মবোধক গানের সুরে সম্মিলিত বাদ্য বাদন শুরু করেন এবং এর সঙ্গে সঙ্গে উঠানের একপাশ থেকে কৃষ্ণ, রাধা ও তার অষ্ট শখী দুই বাহু তুলে বাদ্যের তালে তালে নাচতে নাচতে বাদ্যযন্ত্রীদের সামনের অভিনয়স্থলে এসে বৃত্তাকারে কয়েকবার প্রদক্ষিণ করেন। এরপর বাদন শেষে কৃষ্ণ এবং রাধাসহ শখীরা দুই দলে বিভক্ত হয়ে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বন্দনা পর্বের সূচনা করে; এক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ-রূপী অভিনেতার মুখোমুখি শ্রীরাধিকা ও শখী-রূপী অভিনেতারা জোড়হাতে বসে বন্দনার সূচনা করেন এবং বন্দনার একটি অন্তরা শেষে তারা বসা অবস্থা থেকে জোড়হাতে দেহের উপরের অংশ ঘোরাতে ঘোরাতে উঠে দাঁড়ায়, কিন্তু পরবর্তী অন্তরা শুরুর আগেই বসে যায় ও নতুন অন্তরা শুরু করে। বন্দনায় সাধারণতঃ দেবী সরস্বতী স্তুতি করা হলেও কখনো কখনো পিতা-মাতা, শিক্ষাগুরু প্রমুখেরও স্তুতি করা হয়। বন্দনার পর শুরু হয় মূল পালা যেখানে “সরকার”, যিনি কৃষ্ণ চরিত্রেও অভিনয় করেন, বর্ণনা করেন এবং এর প্রত্যুত্তরে থাকে রাধার কথকতা। অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনায় বর্ণনার সময় অভিনেতারা অভিনয় শৈলী এবং গীতের সঙ্গে নৃত্য প্রদর্শন করে থাকে।
পরিবেশনা-স্থল
অষ্টক গীত / নৃত্যের শিল্পী ও বাদ্যকরেরা সবক্ষেত্রেই দাঁড়িয়ে থেকেই এর পরিবেশনা প্রদর্শন করে থাকে। রাত্রিকালীন অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনার জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে মঞ্চ ব্যবহার করা হয় যার সুনির্দিষ্ট কোনো আকৃতি নেই; সাধারণ যাত্রা-পালার মঞ্চেই এটি পরিবেশিত হয়। আর দিনের বেলায় পরিবেশনার ক্ষেত্রে কুশীলররা বাড়ির উঠানে তাদের সুবিধামতো স্থানে অবস্থান নিয়ে অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনা করে এবং দর্শকগণ উঠানের চারিপার্শ্বে ও ঘরের বারান্দায় বসে বা দাঁড়িয়ে তা উপভোগ করে।
কুশীলবদের সাজ-সজ্জা
অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনার সাথে যুক্ত শিল্পীরা সাজসজ্জায় বিভিন্ন ধরনের রং ও প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করে থাকেন; যেমনঃ স্নো, পাউডার, কাজল, আলতা, কিছু রাসায়নিক দ্রব্য প্রভৃতি। এসব কুশীলবদের পোশাক সব-সময় বর্ণিল ধরনের হয়ে থাকে, যেমনঃ কৃষ্ণ চরিত্রে রূপদানকারী শিল্পী জরির কাজ করা আঁটসাঁট একটি কটি-বস্ত্র ও ধুতি পরে, আবার রাধা ও তার শখী চরিত্রে রূপদানকারীরা উজ্জ্বল রংয়ের শাড়ি পরিধান করেন। আর পরিবেশনার সাথে যুক্ত অন্যান্য কুশীলবরা সাধারণতঃ তাদের প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহার্য পোষাকই পরিধান করে। এই সাজ-সজ্জা সাধারণতঃ বাড়ির উঠানের এক কোণে ঘেরা-টোপ দিয়ে তৈরী আচ্ছাদনস্থলে গ্রহণ করা হয়।
শ্রোতা-দের শ্রেণী
অষ্টক গীত / নৃত্য সাধারণত নিম্নবর্ণের সনাতন ধর্মাবলম্বী ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী, যেমনঃ দাস, নমশুদ্র, ঘরামি, জেলে, জোলা ও রাজবংশীরা পালন ও উপভোগ করে থাকে। এটি সাধারণতঃ বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে পরিবেশন করা হয় বলে সকল বয়সের ব্যক্তিই এর দর্শক-শ্রোতা।
প্রচলিত অঞ্চল-সমূহ
অষ্টক গীত / নৃত্য বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলার অন্যতম প্রধান লোকজ উৎসব। বাংলাদেশের নিম্নবর্ণের সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত অঞ্চল, যেমন: বৃহত্তর খুলনা, যশোহর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও বরিশালের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে অষ্টক গীত / নৃত্যের প্রচলন রয়েছে।[1]
বিশিষ্ট শিল্পী
বাংলাদেশে অষ্টক গীত ও নৃত্যের স্বনাম-ধন্য কিছু শিল্পীর মধ্যে:
- ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা থানার বালিয়াঘাট গ্রামের স্বরূপ চন্দ্র বিশ্বাস, নিরাপদ বিশ্বাস, রঞ্জিত কুমার বিশ্বাস এবং বিষ্ণুপদ মণ্ডল;
- নড়াইলের বাহিরডাঙা গ্রামের স্বভাবকবি বিপিন সরকার, ভাদুলিডাঙা গ্রামের সুবোধ বিশ্বাস, হাতিয়ারার নিখিল গোস্বামী এবং বাহিরডাঙা গ্রামের বিপিন সরকার;
- কুষ্টিয়া জেলার মিরপুরের হোসেন আলী।
তথ্যসূত্র
- আহমদ, ওয়াকিল (১৯৭৪)। বাংলার লোক-সংস্কৃতি। ঢাকাঃ গতিধারা।