অন্তর্মুদ্রাবাদ

অন্তর্মুদ্রাবাদ, প্রতীতিবাদ, প্রতিচ্ছায়াবাদ বা ইংরেজি পরিভাষায় ইমপ্রেশনিজ্‌ম (Impressionism), ঊনবিংশ শতকে শুরু হওয়া একটি চিত্রকলা আন্দোলন। ১৮৬০-এর দশকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কিছু তরুণ চিত্রশিল্পী নিজেরাই তাঁদের আঁকা ছবি প্রদর্শনীর জন্য ব্যবস্থা করেন। তাঁদের এই প্রচেষ্টার সাথে অন্তর্মুদ্রাবাদের বেশ খানিকটা সম্পর্ক আছে। আন্দোলনের নাম ক্লোদ মনের একটি ছবির নাম থেকে এসেছে। ছবিটির নাম আঁপ্রেসিওঁ, সোলেই ল্যভঁ (Impression, soleil levant)। চিত্র সমালোচক লুই ল্যরোয়া এই ছবির নেতিবাচক সমালোচনা করেছিলেন এবং ছবি আঁকার এই ধরনটিকে ব্যঙ্গ করে "আঁপ্রেসিওঁ" নামে ডেকেছিলেন। ল্য শারিভারি (Le Charivari) পত্রিকাতে শব্দটি প্রকাশিত হওয়ার পর সবাই ধরনটিকে এ নামেই ডাকতে শুরু করে।

ক্লোদ মোনে, আঁপ্রেসিওঁ, সোলেই ল্যভঁ (অন্তর্মুদ্রা, সূর্যোদয়), ১৮৭২, ক্যানভাসে তেলরঙ, ম্যুজে মারমোতঁ মোনে, প্যারিস, ফ্রান্স।

অন্তর্মুদ্রাবাদের মূল কথা হলো বাস্তবতার নিরিখেই ছবি আঁকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কারণ বাস্তব প্রাকৃতিক দৃশ্য বা এ ধরনের অনেক কিছু নিয়েই ছবি আঁকা হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তব দৃশ্য শিল্পীর মনে যে অণুরণন জাগায়, তাকে তার নিজের কল্পনায় ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমেও ছবি আঁকা যেতে পারে। এভাবেই সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ছবি আঁকা শুরু করেন প্যারিসের গুটিকতক তরুণ চিত্রশিল্পী। তাঁদের ছবির মূল বৈশিষ্ট্য ছিল উজ্জ্বলভাবে তুলির ব্যবহার, উন্মুক্ত কম্পোজিশন, আলো এবং এর পরিবর্তনশীল মানের উপর গুরুত্ব প্রয়োগ, খুব সাধারণ বিষয়বস্তু, মানুষের অবধারণ ও অভিজ্ঞতা ফুটিয়ে তোলার জন্য চলনের ব্যবহার এবং ভিন্নরকম চাক্ষুষ দৃষ্টিকোণ।

চিত্রশিল্পে অন্তর্মুদ্রাবাদের উত্থান ঘটার পর শিল্পের অন্যান্য শাখায় একই ধরনের আন্দোলনের সূচনা ঘটে। এর মধ্যে আছে অন্তর্মুদ্রাবাদীয় সঙ্গীত এবং অন্তর্মুদ্রাবাদীয় সাহিত্য। শুধু ঊনবিংশ শতকের সেই সময়ের ছবিগুলোই নয়, বর্তমানে যেকোনো সময়ে ঐ ভঙ্গিতে আঁকা ছবিকেই অন্তর্মুদ্রাবাদের কাতারে ফেলা হয়।


অন্তর্মুদ্রাবাদের অগ্রপথিকেরা

সময়রেখা: অন্তর্মুদ্রাবাদীদের জীবন

অন্তর্মুদ্রাবাদী

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.