অনন্যা চট্টোপাধ্যায়
অনন্যা চট্টোপাধ্যায় একজন বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী, যিনি তার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী “আবহমান” নামক সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পরিচিত।[1] তিনি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন একজন টেলিভিশন অভিনেত্রী হিসেবে। তিনি বহু টেলিভিশন সিরিয়াল, সিনেমায় অভিনয় করেন, যার মধ্যে তিনটি পরিচালক “অঞ্জন দত্ত”। তিনি “আবহমান” সিনেমায় একজন বিবাহিত পরিচালকের স্ত্রী হিসেবে অভিনয় করে, জাতীয় পুরস্কার জিতেন। এই ছবি পরিচালক ছিলেন “ঋতুপর্ণ ঘোষ”।[2]
অনন্যা চট্টোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | ভারত |
পেশা | অভিনেত্রী |
শৈশব এবং শিক্ষাজীবন
তিনি কলকাতায় জন্মগ্রহণ এবং বেড়ে উঠেন, তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় জি.ডি. বির্লা শিক্ষা কেন্দ্রে (G.D.Birla Centre For Education)। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মহিলা কলেজ “জোগামায়া দেবী কলেজ” থেকে জীববিদ্যায় পড়ালেখা করেন।[3]
ক্যারিয়ার
অনন্যা চট্টোপাধ্যায় যখন টেলিভিশনে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন, তখন তিনি মমতা শঙ্করের নৃত্য প্রতিষ্ঠানের একজন ছাত্রী ছিলেন। তার প্রথম টেলিভিশন সিরিয়াল “দিন প্রতিদিন”। তিনি এই সিরিয়ালে “রুদ্রনীল ঘোষ’র বিপরীতে অভিনয় করেন। তার থেকে তিনি বহু টেলিভিশন সিরিয়াল নাটক যেমনঃ তিথির অতিথি, আলেয়া এবং অনন্যা তে অভিনয় করেন।[3] যদিও তার অভিনয়ে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তবুও তার অভিনয় অনেক প্রসংশিত হয়, এবং তার অতিপরিচিতি লাভ করে।[3] এর পরপরই তিনি অনেক টেলিফিল্মে অভিনয় করেন, যার তিনটি টেলিফিল্মের কন্ঠশিল্পী-পরিচালক ছিলেন “অঞ্জন দত্ত”। এই তিনটি টেলিফিল্ম হলঃ জন জনি জনার্দন,এক দিন দার্জিলিং এবং আমার বাবা। তিনি “অঞ্জন দত্ত” পরিচালিত “ব্যোমকেশ বক্সী”র গোয়েন্দা সিনেমা “আদিম রিপু” তেও অভিনয় করেন।[4] এর পরপরই তিনি তার সিনেমায় অভিষেক করেন “বসু চট্টোধ্যায়”-এর “টক ঝাল মিষ্টি”। তারপর তিনি অভিনয় করেন “শরণ দত্ত’ এর থ্রিলার সিনেমা “রাত বারোটা পাঁচ” (২০০৫)।[2] “মৈনাক ভৌমিক” এর কৌতুক সিনেমা “আমরা (২০০৬)” এ কাজ করার পর তিনি তার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা “অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়” পরিচালিত প্রথম সিনেমা “প্রভু নষ্ট হয়ে যায়” (Lord, Let the Devil Steal My Soul) সিনেমাতে অভিনয় করেন। যার প্রিমিয়াম শো হয় ১৩তম “কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে” (Kolkata Film Festival)।[5]
২০০৯ সালে, সুমন ঘোষের “দ্বন্দ্ব” ছবিতে তিনি বর্ষীয়ান সিনেমা অভিনেতা “সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের” বিপরীতে অভিনয় করে তার অভিনয় পেশার ভিত্তি আরো পাকা করেন। তারপর আনুপ সেনগুপ্তের “মামা ভাগ্নে (২০০৯)” অভিয়নয় করে, যে সিনেমায় তার অভিনয় "stellar" হিসেবে বিবেচিত হয়।[6][7] যাহোক “ঋতুপর্ণ ঘোষ” এর “আবহমান (২০০৯)”, যা মুক্তি পায় ২০১০ সালে। তিনি তাকে একজন স্বনামধন্য অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন[8] এবং তিনি সেরা অভিনেত্রী হিসেবে “জাতীয় পুরস্কার” অর্জন করেন। যা তার প্রাপ্ত প্রথম সম্মান। ২০১২ সালে “কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়” পরিচালিত “মেঘে ঢাকা তারা” বাংলা সিনেমায় তিনি নীলকান্ত বাগচীর স্ত্রী দুর্গা হিসেবে অভিনয় করেন।[9] তিনি “জি বাংলা” টেলিভিশন চ্যানেলে বিখ্যাত বাংলা সিরিয়াল “সুবর্ণলতায়” প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন।[10]
কাজ
সিনেমা
বছর | চলচ্চিত্র | পরিচালক | চরিত্র |
---|---|---|---|
২০০৫ | রাত বারোটা পাঁচ | শ্যামলী | |
২০০৬ | আমরা | শ্রেয়া | |
২০০৭ | প্রভু নষ্ট হয়ে যায় | ||
২০০৯ | অংশুমানের ছবি | অতনু ঘোষ | সূর্য রায় |
২০০৯ | দ্বন্দ্ব | সুমন ঘোষ | সুদিপ্তা |
২০০৯ | মামা ভাগ্নে | ||
২০১০ | ল্যাপটপ | কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় | শুভনা |
২০১০ | আবহমান | ঋতুপর্ণ ঘোষ | শিখা সরকার বা শ্রীমতী সরকার |
২০১১ | ভাল মেয়ে খারাপ মেয়ে | তমাল দাসগুপ্ত | রিয়া |
২০১২ | ইতি মৃণালীনী | অপর্ণা সেন | হিয়া মজুমদার |
২০১২ | তিন কন্যা | অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় | ন্যান্সি |
২০১৩ | আনোয়ার কা আজিব কিসা | বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত | মালিনি |
২০১৩ | মেঘে ঢাকা তারা | কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় | দুর্গা |
২০১৪ | যদি লাভ দিলে না প্রাণে | অভিজিৎ গুহ | পারোমিতা |
২০১৫ | যোগাযোগ | শেখর দাস | শ্যামা সুন্দরী |
টেলিভিশন
সিরিয়াল
- দিন প্রতিদিন
- তিথির অতিথি
- আলেয়া
- মানিক
- অনন্যা
- বাণিশিখা
- দৈত্যরিকা
- কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে
- নানা রঙের দিনগুলি
- পূর্বপুরুষ
- কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি
- সুবর্ণলতা (জি বাংলা) (প্রধান চরিত্র)
টেলিফিল্ম
- জন জনি জনার্দন
- এক দিন দার্জিলিং
- আমার বাবা
- নীর ভগ্নীনী
- আকাশের খোঁজে
- স্পন্দন
- দূয়োরাণীর সাধ
- ভালবাসো
- অনাহূত অতিথি
- স্বপ্নের নাম ভালবাসা
- আমার প্রাণের পরে
- হয়ত তোমারি জন্য
- গোপন কথাটি
- ইছামতি
- সন্ধ্যেবেলার আলো
- জুলি
- সুখ
- অপরিচিত
- শুধু একা
- অন্য ভালবাসা
- প্রস্থান পর্ব
- প্রেমপত্র
- সংক্রমণ
- একটকু ইচ্ছে
- জঙ্গলের চিত্রনাট্য
- দেবদাস-পারু
পুরস্কার
- জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার- সেরা অভিনেত্রী “আবহমান” সিনেমার জন্য।[10]
তথ্যসূত্র
- Bengal shines at National Awards, 4 from city ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৪-০১-১০ তারিখে The Times of India , Sep 16, 2010.
- Who is National Award winner Ananya Chatterjee? ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে CNN-IBN, Sep 16, 2010
- "Ananya knows the science of acting"। The Times of India। জুন ২৮, ২০০৪।
- "National Award is the first big award of my life: Ananya"। Sify.com। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১০।
- "Reviews: Probhu Nashto Hoye Jai"। Screen। ডিসেম্বর ২১, ২০০৭।
- "Movie Review: Dwando"। The Times of India। জুলাই ২৫, ২০০৯।
- "Moview Review: Mama Bhagne"। The Times of India। সেপ্টে ২০, ২০০৯।
- "Rituparno Ghosh's 'Abohomaan' is brilliant"। CNN-IBN। মার্চ ২৮, ২০১০। এপ্রিল ১৩, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৪।
- Nag, Kushali (জুন ১৬, ২০১২)। "Ritwik Ghatak"। The Telegraph (Calcutta)। Calcutta, India। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১২।
- "Ananya's happy to be herself"। The Telegraph (Calcutta)। Calcutta, India। এপ্রিল ১১, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১২।